হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে আমরা অনেক কৃতজ্ঞ, তিনি আমাদের মুসলমান ধর্মের মানুষ করেছেন। পৃথিবীতে অনেক ধর্ম এসেছে, পাশাপাশি অনেক বড় বড় মানুষ এসেছেন যারা মানবতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। কমিউনিস্টরাও চেয়েছিল মানবতা প্রতিষ্ঠার জন্য। অনেক বুদ্ধিজীবী যেমন নেলসন মেন্ডেলাও চেষ্টা করেছিলেন। আল্লাহ যখন দুনিয়া থেকে মানবতা বিদায় নিচ্ছিল, মানুষ পশুর চেয়েও অধম হয়ে পরেছিল। সেই আইয়ামে জাহেলিয়ার যুগে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ)কে প্রেরণ করলেন। হুজুর (সাঃ) তার সারাজীবনে মানবতা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মানবতা মানেই হলো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহর নবীর জীবনের অনেক ঘটনা থেকেই মানবতার উদাহরণ পেয়ে থাকি। তিনি একবার বিচার করতে গিয়ে বলেছিলেন, আমার কন্যা ফাতেমা (রাঃ)ও যদি চুরি করতো, তাহলে তার হাত কেটে দিতাম। এটাই হচ্ছে ইনসাফ। এখন জোর যার মুল্লুক তার। আমাদের কাছে স্বর্ণের খনি আল কোরআন আছে। কিন্তু আমরা তা সঠিকভাবে ব্যবহার করি না। তাইতো আমাদের দেখে ইহুদিরা লজ্জা পায়। ইউরোপের অনেক দেশে খ্রিস্টান বা ইহুদিদের দেখেছি তারা ইসলাম গ্রহণ না করেও এই ধর্মের অনেক ভালো ভালো জিনিসগুলো গ্রহণ করেছে। আমাদের মাঝে আছে ভাঁওতাবাজি আর মিথ্যাচার। আমাদের সবকিছুতেই রাজনীতি ঢুকিয়ে ফেলি। ভোটের সময় আমাদের নেতারা গরিবের বাড়িতে যায়, কিন্তু পাস করে গেলে গরিবদের দেয়া ওয়াদা ভুলে যায়। আমি নিজ এলাকায় গরিবের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করি। আল্লাহ যেন এই তৌফিক আমাকে সারাজীবন দান করেন, সেটাই চাই।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে শীতকালে অনেক কোরআন হাদিসের আলোচনা হয়। সেখানে গতানুগতিক আলোচনা হয়। ঈদের আগের রাত সম্পর্কে মহানবী (সাঃ) ঈদের আগের দুইরাতে যারা আল্লাহর ইবাদত করবে, তারা কেয়ামতের ময়দানে এই কারণে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবেন। ঈদের দিনে পশু কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহ একটা বিষয় প্রকাশ পরিষ্কার করেছেন, লক্ষ লক্ষ পশু মানুষের জন্য উৎসর্গ করে। এখানেই কোরবানির রহস্য লুকায়িত। আমি যখন মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি তখন সেখানে ১০৫ দেশের ছাত্র ছিল। তখন একজন চীনা ছাত্র আমার সাথে আলোচনায় বসে বলেছিল, ইসলাম কিভাবে মানবতার ধর্ম হয়; যখন মানুষ খুন করা হয়। তখন আমি তাকে উত্তর দিয়েছিলাম, ইসলাম কখনোই খুনকে সমর্থন করে না। আইনের মাধ্যমে যদি খুনের বদলা নেয়া হয়; তখন অনেক জীবন বেঁচে যাবে। আমি তাকে বলেছিলাম, আপনাদের চীনে তো হাজার হাজার লোক খুন হয়। কিন্তু সৌদি আরব, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে খুনের বদলা খুন হয়, তাই সেখানে খুনের সংখ্যা কম।
অনুষ্ঠানের শেষে হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী দেশ, জাতির সমৃদ্ধির কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।