প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই, ২০২০, ৭:১৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মোংলায় স্বামী-সন্তান রেখে পরকীয় প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছেন এক স্কুল শিক্ষিকা। ধর্মান্তরীত হয়ে নাম পরিবর্তন করে প্রেমিককে নিয়ে নতুন সংসার বাঁধলেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত বেতন ভাতা তুলছেন আগের নামেই। এ দিকে ওই শিক্ষিকার পরকীয় প্রেম-প্রনয়নের ঘটনাটি নিয়ে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক/ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে। এদিকে ঘরে ঘুমিয়ে রেখে যাওয়া সন্তান তার বিভিন্ন জায়গায় খুজে বেড়াচ্ছে তার মাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সুন্দরবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন শর্মিষ্ঠা মিত্র নামের এক স্কুল শিক্ষিকা। ২০১৬ সালে জুন মাসে শিক্ষকতা পেশায় যোগদেন তিনি। বছর খানেক আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুকে পরিচয় হয় এবং পরকীয় প্রেমে জড়িয়ে পড়েন বিবাহীত উঠতি বয়সি এক বখাটে তরুনের সঙ্গে। বেশ কিছুদিন চুটিয়ে প্রেম করার এক পর্যায় গত মার্চ মাসে স্বামী ও প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়–য়া এক পূত্র সন্তানকে ঘরে ঘুমিয়ে রেখে কাউকে কিছু না বলে হঠাৎ নিখোঁজ হয় ওই স্কুল শিক্ষিকা। স্বামী-সন্তান ও স্বজনরা টানা একমাস খোঁজা খুঁজির পর পরকীয় প্রেমিকের সঙ্গে বসবাসের সন্ধান পান তার। আর এরই মধ্যে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে নোটারীর মাধ্যমে ধমার্ন্তরীত হয়ে মোঃ রুবেল নামের ওই বখাটে প্রেমিক যুবককে বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করে স্কুল শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা ওরফে সেজুতি। এ দিকে স্কুল শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা মিত্র ধমান্তরীত হয়ে নাম পরিবর্তন করলেও শিক্ষা বিভাগের কাউকে কিছু না জানিয়ে গোপনে আগের নামেই সরকারি কোষাগার থেকে প্রতিমাসের বেতন ভাতা তুলছেন।
জন্মলগ্ন থেকে অসুস্থ্য অবস্থায় বেড়ে ওঠা তার এক মাত্র পূত্র সন্তানকে রেখে স্কুল শিক্ষিকার অন্যত্র পরকিয়া করে বিয়ে করার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষক/ শিক্ষাথর্ী ও অভিভাবক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ওই শিক্ষিকার এহেন কর্মকান্ডে সামাজিক ভাবে বিভ্রতবোধ হচ্ছেন বলে জানান শিক্ষক ও অভিভাবকদের অনেকেই। যার নিজের সন্তানের প্রতি মায়া ও ভালবাসা নেই, সেই শিক্ষিকা স্কুলের কমলমতি শিক্ষাথর্ীদের কি শিক্ষা দিবেন বা তার কাছ থেকে কি ধরনের শিক্ষায় শিক্ষিত হবেন শিশু-কিশোর এমন প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
তবে এ বিষয় স্কুল শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা মিত্র (নতুন নাম সেজুতি) বলেন, তার আগের স্বামী ভ্রম্যনমাঠ গ্রামের বাসিন্দা সুশান্ত বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল না থাকায় অন্যত্র বিয়ে করেছেন। আর বিয়ের বিষয়টি একান্ত তার ব্যক্তিগত বিষয় এবং শিক্ষা কর্তৃপক্ষকে সময় হলেই জানানো হবে বলে জানায় স্বামী-সন্তান ফেলে রেখে ধর্মান্তীত হয়ে বিয়ে করা ওই শিক্ষিকা।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিমল চক্রবতর্ী জানান, প্রেম-প্রনয়ের ঘটনাটি ওই শিক্ষিকার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে এতে শিক্ষক সমাজের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ বিষয় বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কবির উদ্দিন জানান, ঘটনাটি মৌখিক ভাবে জানার পর তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে খোঁজ খবর সহ সার্বিক বিষয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।