আরিফের চতুর্থ স্ত্রী ডা. সাবরিনা!
প্রকাশ: সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০২০, ১০:৪১ এএম | অনলাইন সংস্করণ
করোনা মহামারিতে মানুষের জীবন নিয়ে নির্মম প্রতারণায় নাম উঠে আসা ডা. সাবরিনা এ চৌধুরী সরকারি একটি হাসপাতালে চাকরির পাশাপাশি জেকেজির চেয়ারম্যান। তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক। পাশাপাশি তিনি জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান। আর তাঁর স্বামী আরিফ চৌধুরী প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
ডা. সাবরিনা আরিফের প্রথম স্ত্রী নন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই দম্পতির জীবনও রূপকথার গল্পের মতো। আরিফের চতুর্থ স্ত্রী সাবরিনা। আরিফের এক স্ত্রী থাকেন রাশিয়ায়, অন্যজন লন্ডনে। আরেকজনের সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তবে ছাড়াছাড়ির পরও সাবেক ওই স্ত্রী উচ্চমহলে আরিফের জন্য দেনদরবার করে যাচ্ছেন।
আরিফ-সাবরিনা দম্পতি করোনা টেস্টের জন্য জনপ্রতি নিয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। বিদেশি নাগরিকদের কাছে জনপ্রতি ১০০ ডলার (সাড়ে আট হাজার টাকা)। এ হিসাবে করোনার টেস্ট বাণিজ্য করে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে আট কোটি টাকা। সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে কিভাবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন ডা. সাবরিনা?
জেকেজি ২৭ হাজার রোগীর করোনার টেস্টের রিপোর্ট দেয়। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনার আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০টি রিপোর্ট তারা নিজেরা তৈরি করেছে। জেকেজির সাত-আটজন কর্মী মিলে ভুয়া এসব রিপোর্ট তৈরি করে। রোগীদের ১০টি প্রশ্ন দেওয়া হতো। এর মধ্যে পাঁচটির বেশি প্রশ্ন করোনা উপসর্গের সঙ্গে যাঁর মিলে যেত, তাঁকে করোনা পজিটিভ রিপোর্ট দেওয়া হতো। অন্যদের দেওয়া হতো নেগেটিভ রিপোর্ট। এভাবেই চলছিল স্বামী-স্ত্রী করোনা পরীক্ষার প্রতারণা।
নমুনা সংগ্রহের জন্য জেকেজি’র হটলাইন নম্বর ছিল। ওই নম্বরে কেউ ফোন করলে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা তার বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করত। আবার অনেকে জেকেজির বুথে এসে নমুনা দিত। কোনো মাঠকর্মী বাসায় যাতায়াত করলে তার জন্য দেওয়া হতো এক হাজার টাকা। যদিও দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতির ভিত্তিতে বিনা মূল্যে তাদের স্যাম্পল কালেকশন করার কথা ছিল।
স্বামী-স্ত্রী মিলে করোনা টেস্ট করলেও তাঁদের দাম্পত্য জীবন সুখের নয়। স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের এক চিকিৎসককে মারধর করেন আরিফ চৌধুরী। পরে এ ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলানগর থানায় জিডি করেন ডা. সাবরিনা। এ ছাড়া জেকেজির এক কর্মীকে অশালীন প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় গুলশান থানায় আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। বিএমএর নেতার পরিচয় ভাঙিয়ে চলাফেরা করেন ডা. সাবরিনা।