ফেনীর দাগনভূঞায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা । গত ২১ এপ্রিল কোভিড টেস্ট দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই নিয়মিত অফিসে কাজকর্ম করে যাচ্ছিলেন তিনি।কিন্তু তার নমুনা সংগ্রহের কথা নিজ কার্যালয়ের কাউকে জানালেন না। এ কারণে করোনা ঝুঁকিতে পড়েছে পুরো উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী,জনপ্রতিনিধিসহ,বিভিন্ন প্রয়োজনে আসা মানুষজন।
আক্রান্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সাথে বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমার শারীরিক তেমন কোনো সমস্যা নেই। সামান্য জ্বর ও হালকা গলা ব্যথা থাকায় অনেকটা কৌতুহলবশত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসি ।পরে এক সাপ্তাহ পরে অর্থ্যাৎ গতকাল (২৯ এপ্রিল) হাসপাতাল থেকে বলা হয় আমার করোনা “পজেটিভ”।যা আমি কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিনা। তিনি এখনও সুস্থ আছেন বলে জানান।
জায়লস্কর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মিলন বলেন, জানতাম না তিনি কোভিড টেস্ট এর জন্য নমুনা দিয়েছেন। তবে তিনি সুস্থ, যার কারনে হয়তো নমুনা দেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম করছিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুবাইয়েত বিন করিম বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তি অনেকটা কৌতুহলী হয়ে নিজের টেস্ট করিয়েছিলেন। তেমন কোনো উপসর্গ না থাকায় তিনি গুরুত্ব দেননি।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিন মুন্সি জানান,প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একজন সচেতন নাগরিক।ওনি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তিনি বিষয়টি জানাতে পারতেন।না জানানোর কারনে এখন পুরো উপজেলা প্রশাসন ,পরিষদের কর্মকর্তারা সহ আরো অনেকে করোনার ঝুঁকিতে রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল হাসান বলেন, আমি জানতাম না তার যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কেন গোপন করল তা বুঝতে পারছি না।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন জানান, আক্রান্ত কর্মকর্তা নিজের নমুনা সংগ্রহের কথা বলেনি। এতে সবাই এখন শংকায় পড়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তাকে নিজ বাসায় আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হবে।বুধবার একই দিনে জেলার দাগনভূঞায় দুজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হন। এর মধ্যে একজন মহিলা রয়েছেন, যিনি ঢাকা হতে এসেছিলেন। আক্রান্ত দুজনের মধ্যে করোনার কোন উপসর্গ দেখা যায় নি।
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান। তিনি জানান, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা প্রত্যেকে যেন নিজ থেকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকেন, সেজন্য গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত: প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সংস্পর্শে আসায় বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারমান দিদারুল কবির রতন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান ও তার স্ত্রী, পৌরসভার মেয়র ওমর ফারুক খান ও তার স্ত্রী, জায়লস্কর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মিলন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুবাইয়েত বিন করিম ও আক্রান্ত ব্যক্তিসহ মোট ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এদের প্রত্যেকেই হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।