করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) চিকিৎসায় দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন সিটি বসুন্ধরা’র (আইসিসিবি) অস্থায়ী হাসপাতাল সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন শুধু অপেক্ষা বিদ্যুতের।
আজ বৃহস্পতিবার এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী পরিচালক (ঢাকা) প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম।
তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা অস্থায়ী হাসপাতাল চুড়ান্ত পর্যায়ে। তবে এখন বিদ্যুৎ সংযোগের অপেক্ষায়। ইতোমধ্যে লাইসেন্স বোর্ডের অনুমতি মিলেছে। আগামীকাল শুক্রবার বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হতে পারে। সংযোগ পেলে হাসপাতালের ভেতর বিদ্যুৎ-সংশ্লিষ্ট সব ধরনের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে মাসুদুল আলম বলেন, একটি আধুনিক হাসপাতালের সব সুবিধা আছে এখানে। ফায়ার ফাইটিংয়ের ব্যবস্থা, ডাক্তার ও নার্সদের জন্য ডিসইনফেক্ট করার জন্য আলাদা রুম রয়েছে।
৭১ বেডের আইসিইউ হচ্ছে উলেখ করে নিবাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম বলেন, ব্যয়বহুল হওয়ার পরেও এখানে ৭১ বেডের আইসিউ হচ্ছে। এছাড়া দুই হাজার বেডের এই হাসপাতালের কার্যক্রম আগামী সাত দিনের মধ্যে চালূ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তিনি। এজন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছেন। রোগী ডাক্তার, নার্স হাসপাতালে ঢোকার এবং বাহির হওয়ার জন্য আলাদা রাস্তা আছে। বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা আছে।
অস্থায়ী হাসপাতাল প্রস্তুতি সম্পর্কে এর আগে আইসিসিবি’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন কালের কণ্ঠকে জানান, হাসপাতালের সাধারণ বেড স্থাপন, হলের যাবতীয় কর্মকাণ্ড গত মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। এখন স্বাস্থ্য বিভাগ আমাদের কাছে যেদিন চাইবেন আমরা তাদের বুঝিয়ে দেব। তাদের একটি প্রতিনিধি দল সবকিছু দেখে গেছেন। সেটির নেতৃত্বে ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম।
হাসপাতাল চত্বর ঘুরে দেখা গেছে, চিকিৎসক ও নার্সের চেম্বারগুলোর কাজ শেষ। বেডগুলোতে বেডসিট, ডাস্টবিন, স্যালাইন হ্যাঙ্গারসহ আনুষাঙ্গিক সার্পোট বসানো হয়েছে। টয়লেট নির্মাণও শেষ হয়েছে। হাসপাতালের এসি, চেয়ারসহ অন্যান্য কাজের ফিনিশিংও একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে।
প্রসঙ্গত, দেশের দুর্যোগ পরিস্থিতিতে বিশাল সুযোগ সুবিধা দিয়ে এগিয়ে এসে এই সাপোর্ট দেওয়ার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপ। এখানে অনেক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া যাবে। দ্রুততম শেষ করার স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।
‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে’- এই স্লোগানের আলোয় পথচলা বসুন্ধরা গ্রুপ করোনা ভাইরাসের এই দুর্যোগকালেও দেশ ও জাতির কল্যাণে এগিয়ে এসেছে। দেশে কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী বাড়তে থাকায় সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেয় দেশের শীর্ষস্থানীয় এই শিল্পগোষ্ঠী।
বসুন্ধরা গ্রুপের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির ভিত্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর একটি দল পরির্দশন শেষে পরবর্তীতে এটাকে অস্থায়ী হাসপাতাল বা আইসোলেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যতদিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে ততদিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়।