প্রকাশ: বুধবার, ১ জানুয়ারি, ২০২৫, ৭:৪৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ঝিকরগাছার শতবর্ষী দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কপোতাক্ষের ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে। বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারসহ অন্যান্য স্থাপনা পড়েছে চরম ঝুঁকির মুখে। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের তীরে গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ রঘুনাথনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি।
১৯২২সালে প্রতিষ্ঠিত।গেল বর্ষা মৌসুমে উজানের পানির অব্যাহত চাপে তীরবর্তী এই বিদ্যালয়ের মূল সীমানায় ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি হয়। অনেকটা অংশজুড়ে বিদ্যালয়ের জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
ক্রমান্বয়ে এই অব্যাহত ভাঙ্গন বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ডাকঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের একটি বড় অংশে মারাত্মক ফাটল দেখা গেছে। এটি যেকোন সময় নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সারেজমিন বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির উজান অংশের আনুমানিক ৫শ মিটার আগে প্রাকৃতিকভাবে বাঁকা। এরপর পূর্বাংশের অপর তীরে ব্যক্তি মালিকানাধীন দাবি করা জমিতে বিশাল আকৃতির জায়গা জুড়ে ভেড়িবাঁধ নির্মাণ করে মাছের ঘের তৈরি করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রঘুনাথনগর গ্রামের বাসিন্দা এসএস আহম্মেদ শান্তি নামের এক ব্যক্তি এই মাছের ঘের তৈরি করেছেন। তিনি উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি।
এ ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি দাবি করেন, মাছের ঘেরটি তার পৈতৃক সম্পত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। এখানে নদের কোনো জমি দখল করা হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করা হলেও মূলত কপোতাক্ষ নদের সরকারি জায়গা দখল করে এই মাছের ঘের তৈরি করা হয়েছে। ফলে নদের উজানের পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়ে বিদ্যালয় পাড়ে অব্যাহত চাপ সৃষ্টিই এই বিপর্যয়কর ভাঙ্গনের অন্যতম কারণ বলে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর অভিযোগ। তাছাড়া লক্ষণীয় বিষয় হল উন্মুক্তএই নদে কতিপয় পেশাদার মাছ শিকারীরা নদে যত্রযত্র বাঁশের কোমর ও নেটপাটা দেওয়ায় তাতে কচুরিপানা আটকে থাকায় নদের পানির স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিদ্যালয়টির ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার এটিও কারণ বলে মনে করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ , শিক্ষক মন্ডলী, ছাত্রছাত্রী ও এলাকার সচেতন অভিভাবকমহল।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভূপালী সরকার বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করানো হয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতসময়ের মধ্যে এ ব্যাপারে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা অবগত আছি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।