বৃহস্পতিবার ২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮ পৌষ ১৪৩১

শিরোনাম: কারাভোগ শেষে নিজ দেশে পুশব্যাক হচ্ছেন ভারতীয় ৬৪ জেলে   ৪৩তম বিসিএস: পুনর্বিবেচিত হচ্ছেন বাদ পড়া ২২৭ জন   বাংলাদেশ আমাদের হারিয়ে যাওয়া ভাই: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী   এবার প্রতিশোধ চাইলেন সাঈদীর ছেলে   যুক্তরাষ্ট্রে বর্ষবরণে গাড়ি হামলায় মৃত্যু বেড়ে ১৫   ভ্যাট বাড়লেও নিত্যপণ্যে প্রভাব পড়বে না: অর্থ উপদেষ্টা   রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে, শবে মেরাজ ২৭ জানুয়ারি   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
পুলিশের ‘নির্বাচনী পদক’ বাতিল করছে সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:১৬ এএম | অনলাইন সংস্করণ

সেবা, সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ভূষিত করা হয়ে থাকে রাষ্ট্রীয় দুটি পদকে। যার একটি রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) এবং আরেকটি হলো বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)। পুলিশের চাকরিতে এসব পদক খুবই সম্মানজনক বলে বিবেচনা করা হয়। পদক পাওয়া কর্মকর্তারা আর্থিক সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি নামের শেষে উপাধি হিসেবে এই পদক ব্যবহার করে থাকেন।

বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ ১০৩ পদস্থ কর্মকর্তাকে ২০১৮ সালের জন্য দেওয়া বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) বাতিল করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত ফাইল চালাচালি করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই রাষ্ট্রীয় এই পদক প্রত্যাহার করা হবে। পদকের সঙ্গে দেওয়া আর্থিক সুবিধা ফেরত নেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ওই ১০৩ জনের পদক প্রত্যাহার করা হলে তা হবে নজিরবিহীন। কারণ, এর আগে কখনো বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে একসঙ্গে এতজনের বিপিএম-পিপিএম পদক প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটেনি।

সূত্র বলেছে, পুলিশ সদর দপ্তরই এ পদক প্রত্যাহার ও পদকের সঙ্গে দেওয়া টাকা ফেরত নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে ২২ ডিসেম্বর পাঠানো চিঠিতে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (কনফিডেনশিয়াল) মো. কামরুল আহসানের স্বাক্ষর রয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সক্রিয় দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশের ১০৩ পদস্থ কর্মকর্তাকে ঢালাওভাবে পদক দিয়ে রাষ্ট্রীয় পদকের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।

১৯৭৬ সাল থেকে রাষ্ট্রীয় এ দুটি পদক দিচ্ছে সরকার। পাশাপাশি সরকার ১৯৯৯ সাল থেকে পুলিশ সদস্যদের সৃজনশীল উদ্ভাবনীমূলক কর্মকাণ্ড, মামলার রহস্য উদঘাটন, তদন্তসংশ্লিষ্ট কার্যক্রম, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা এবং দাপ্তরিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য বিপিএম সেবা ও পিপিএম সেবা পদক দিচ্ছে। পুলিশ সদস্যদের কাছে এসব পদক খুব সম্মানজনক ও মর্যাদার বলে বিবেচিত।

পুলিশ সদর দপ্তরের চিঠিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের বিতর্কিত সংসদ নির্বাচনে (একাদশ সংসদ নির্বাচন) সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য ঢালাওভাবে ৬৪ জেলার এসপি, সব ডিআইজি ও সব পুলিশ কমিশনারকে রাষ্ট্রীয় পদক দেওয়া হয়। এই পদকের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় পদকের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। বিতর্কিত ওই নির্বাচনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ১০৩ জনকে দেওয়া পুলিশ পদক বিধি অনুযায়ী প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হচ্ছে। একই সঙ্গে চিঠিতে তাঁদের অনুকূলে পদক-সংক্রান্ত আর্থিক সুবিধা বন্ধ এবং ইতিপূর্বে নেওয়া অর্থ ফেরত নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

২০১৮ সালের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ পদক পাওয়া উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা হচ্ছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক দুই কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া ও শফিকুল ইসলাম, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল কাহার আকন্দ, আতিকা ইসলাম, মোজাম্মেল হক, আনোয়ার হোসেন, মোজাম্মেল হক ও মনিরুজ্জামান। খুলনা রেঞ্জের তৎকালীন ডিআইজি দিদার আহম্মেদ, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এম খুরশিদ হোসেন, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম এবং ৬৪ জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার। সেবার ৪০ জনকে বিপিএম ও ৬২ জনকে পিপিএম পদক দেওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বিতর্কিত নির্বাচনে কাজের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের খুশি করতে দেওয়া পদক ও পদকের সঙ্গে দেওয়া অর্থ ফেরত নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে পদক দেওয়ার ফাইল চালাচালি শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই ফাইলে স্বাক্ষর করলে তা অনুমোদিত হবে।

ওই নির্বাচনে রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভরার ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (কনফিডেনশিয়াল) মো. কামরুল আহসান এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা জানান। বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ে অনেক চিঠি পাঠানো হয়। তবে কাদের পদক বাতিল করা হচ্ছে, সে বিষয়ে আমার জানা নেই।’

পরে আইজিপি বাহারুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিতর্কিত ১০৩ জন কর্মকর্তাকে দেওয়া বিপিএম ও পিপিএম পদক বাতিল করার বিষয়ে একটি চিঠি মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় থেকে সে ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। দেখা যাক, মন্ত্রণালয় থেকে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২০১৮ সালে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য পুলিশের ১০৪ জন সদস্য বিপিএম–সেবা এবং ১৪৩ জন পিপিএম–সেবা পদক পেয়েছিলেন।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]