প্রকাশ: বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:২১ এএম | অনলাইন সংস্করণ
সারাদেশের মতোই শীতের তীব্রতা বাড়ছে শরীয়তপুরেও। গত তিনদিন ধরে কুয়াশার সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় একদিকে যেমন বাড়ছে শীত, অন্যদিকে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ।
এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট শয্যা ১০টি। সোমবার গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৬জন এবং গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মোট রোগী ভর্তি হয়েছে ১৭৬ জন। শুধু সদর হাসপাতালেই প্রতিদিন প্রায় ৩৫/৪০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে। শয্যার প্রায় সাতগুণ বেশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী থাকায় হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোরে অবস্থান করতে হয়েছে আক্রান্ত শিশুসহ মা ও তার স্বজনদের।
হাসপাতালের বারান্দাসহ যত্রতত্র রোগী। কেউ তার ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুকে কোলে নিয়ে খাওয়াচ্ছেন, কেউবা সান্ত্বনা দিচ্ছেন আবার কেউ শিশুর চিকিৎসা দিচ্ছেন। অধিকাংশ শিশু রোগী পাতলা পায়খানা ও বমি নিয়ে ভর্তি হয়েছে।
চিকিৎসা নিতে আসা এক শিশুর বাবা শরীয়তপুর জেলা শহরের মোটরসাইকেল ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল বলেন, হাসপাতালে রোগীর অনুপাতে শয্যা না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও স্বজনরা। ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বেহাল দশা। ভোগান্তি এড়াতে কোনো কোনো রোগীর চিকিৎসা নিয়ে স্বজনরা বাড়ি ফিরছেন বলে জানিয়েছেন রোগীর স্বজনরা।
ডায়রিয়া রোগীদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স পলকী কনা বলেন, শীতজনিত কারণে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। রোগীর শয্যা ও নার্স সংখ্যা কম থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের নবজাতক, শিশু ও কিশোর মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেশ মজুমদার বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়াজনিত সমস্যা শিশুদের ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। গরমের তুলনায় এই শীতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ৪গুণ।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের শয্যা সংখ্যা মাত্র ১০টি। ফলে দুর্ভোগ হচ্ছে রোগীদের। তারপরও রোগীর চিকিৎসায় সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে শিশুদের পাতলা পায়খানা বা বমি হলেই আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন এই শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, শীতের কারণে শিশুদের ডায়রিয়ার প্রকৌপ বেড়েছে। এদিকে শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের হাসপাতালের ফ্লোরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শিশুদের মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। তাছাড়া কোনো কারণেই বাসী খাবার খাওয়ানো যাবে না।