নারায়ণগঞ্জ বিআইডব্লিউটিএ’র নির্মাণাধীন জেটি ব্যবহার করে পণ্য খালাসের সময়, বার্জ ক্রেনের বুম জাতীয় গ্রীডে যুক্ত ১১ হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুৎলাইনে লেগে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে কর্মরত শ্রমিক, পথচারী ও স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
এ বিস্ফোরণে বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বিদ্যুৎ বিভাগ বেঁচে গেলেও স্থানীয় বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে।
গতকাল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো ঘাটে এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র নির্মানাধীণ জেটিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় বেশকিছু মানুষের টিভি, ফ্রিজের মতো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সেখানে কর্মরত একাধিক শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শী ভোরের পাতাকে জানায়, এস এস এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘বিআইডব্লিউটিএ’র আওতাধীন সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো এলাকায় জেটি নির্মাণের কাজ পায়। বর্তমানে জেটিটি নির্মানাধীণ। এ অবস্থায় শিবলী এন্টারপ্রাইজ নামে অপর একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নদীতে আইয়ুব আলী নামে এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে বার্জ ক্রেন রেখে ক্রেনের বিশালাকৃতির বুম দিয়ে জাহাজ থেকে গতকাল সোমবার দুপুরে পণ্য খালাসের কাজ করছিল। এ সময়, ক্রেনের উঁচু বুম জাতীয় বিদ্যুৎগ্রীডে যুক্ত ১১ হাজার কিলোওয়াট বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনে লেগে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়ে আগুনের ফুল্কি পড়তে দেখা গেছে। এ সময় পণ্য খালাসে শ্রমিকরা ও ক্রেনে থাকা শ্রমিক তাৎক্ষণিক আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি করতে থাকে। যদিও আতঙ্ক শেষে তারা পুনরায় কাজ শুরু করে।
অপর একটি সূত্র জানায়, বিআইডব্লিউটিএ’র কিছু অসধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে জেটি নির্মাণের আদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানের লোকজন এবং পণ্য খালাস ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন একে অপরের সাথে যোগসাজশে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে জেটি নির্মাণের কাজ শেষ না হতেই ভারি পণ্য খালাসের কাজ করছে।
এর আগে বার্জ ক্রেন দিয়ে নির্বিগ্নে কাজ করার উদ্দেশ্যে দিনের আলোয় বিনা অনুমতিতে ২১ও ২২ ডিসেম্বর শিবলী এন্টারপ্রাইজ সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো ঘাট এলাকায় নদী খনন করে। এতে জেটির টেকসই স্থায়িত্বের পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাদের দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এ ব্যাপারে শিবলী এন্টারপ্রাইজের কারও সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
বিআইডব্লিউটিএ’র কাছ থেকে জেটি নির্মাণের কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এরিয়া ইনচার্জ রাজ্জাক ভোরের পাতাকে বলেন, নির্মাণাধীন জেটি দিয়ে পণ্য খালাস বৈধ না অবৈধ তা বিআইডব্লিউটিএ’ এর কর্মকর্তারাই বলতে পারবেন। এছাড়া আজ (২৩ ডিসেম্বর) আমি সাইটে যাইনি।
বিআইডব্লিউটিএ’র পোর্ট অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ভোরের পাতাকে বলেন, নির্মাণাধীন জেটি দিয়ে কোনভাবেই পণ্য খালাস করতে পারেন না। আর বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচে বা পাশে ক্রেন ব্যবহারেরও কোনো নিয়ম নেই। আর পণ্য খালাসের জন্য পাশে থাকা বাঁশের জেটি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানকে। আমি সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছি।
এ সময়, নির্মাণাধীন জেটি ইজারা দেওয়ার কোন বৈধতা আছে কিনা এমন প্রশ্নের সঠিক জবাব তিনি দিতে পারেননি।