কাজের প্রয়োজনে কখনও কখনও রাত জাগতে হয়। কিন্তু এই রাত জাগা যদি নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয় তাহলে হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, টানা কয়েকদিন রাত জাগলে শরীর ভেতর থেকে ভাঙতে শুরু করে। শরীরে বাসা বাঁধে নানারকম রোগ-ব্যাধি। এমনকি কমে যায় আয়ুও।
চলুন জেনে নেয়া যাক অতিরিক্ত রাত জাগলে যে মারাত্মক ৬টি ক্ষতি হয়:
১. উচ্চ রক্তচাপ: কয়েকটি গবেষণায় এসেছে টানা ৩-৪ দিন রাত জেগে থাকলে বা পরিমিত না ঘুমালে শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ পতন হয়, যার প্রভাবে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে। আর যদি তা নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
২. হার্টের ক্ষতি: হার্টের সাথে ঘুমের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, পরিমিত না ঘুমালে ধীরে ধীরে হার্টের কার্যক্ষমতায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে এবং হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও বেড়ে যেতে পারে। হাই প্রেসারের পাশাপাশি, অনিয়মিত হার্টবিট, হার্টরেট এমনকি হার্ট ফেইলিউর পর্যন্ত হতে পারে।
৩. ত্বকের সৌন্দর্য হ্রাস: রাত জাগার সঙ্গে সরাসরি হরমোনের তারতম্য জড়িত। না ঘুমালে স্ট্রেস হরমন বৃদ্ধি পায়, যার কারণে ত্বকের কোলাজেন ভাঙতে শুরু করে এবং পর্যাপ্ত স্কিন কেয়ার সত্ত্বেও অল্প বয়সেই চেহারায় মলিনতা, ব্রণ, বয়সের ছাপ, বলিরেখা, চোখের নিচে কালি পরা এসব দেখা দিতে পারে, যা মোটেই সুখকর নয়।
৪. ওজন বৃদ্ধি: ২০১৪ সালের একটি স্টাডিতে দেখা গেছে, অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা না ঘুমালে ৩০% লোকের ক্ষেত্রে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে। জেগে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুধার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং সেটা নিবারণ করতে গিয়ে ওজন বেড়ে গিয়ে কোলেস্টেরলও বেড়ে যায়; যা কিনা হার্টের ক্ষতিরও কারণ।
৫. সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কমে যাওয়া: কিছু গবেষনায় দেখা গেছে, টানা কয়েক মাস রাতে ঠিক মতো ঘুম না হলে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের বিশেষ কিছু অংশ এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়ে যে ঠিক মতো কাজ করে উঠতে পারে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কম সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। উপস্থিত বুদ্ধিও লোপ পেতে থাকে।
৬. রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা লোপ পায়: ২০১২ সালে আমেরিকার একটি প্রতিষ্ঠানে ৩০ জন ব্যক্তির ওপর স্টাডি করে জানা যায়, রাত জাগার সাথে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও লোপ পাওয়ার হার সমানুপাতিক। সবকিছুতেই শৃঙ্খলার প্রয়োজন। মানুষ নিশাচর প্রাণী নয়। সকাল-দুপুর-বিকেল-রাত প্রতিটি সময়ের এক্টিভিটির মানুষের জীবনের ওপর প্রভাব রয়েছে। যারা ভোর পাঁচটায় ঘুমান স্বভাবতই সকালে সময়মতো উঠতে পারেন না, আর উঠলেও সারাদিনে মস্তিষ্ক বা শরীর তার ছন্দ হারায়। সারাদিনের কাজেও মানসিক বিষাদ ভর করে।