প্রকাশ: সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১:০৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে মানহানির ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রোববার চৌদ্দগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে মানহানির ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে- বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই হত্যাসহ ৯টি মামলার আসামি। আমরা সকলকে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা দিয়ে লাঞ্ছিত করেছে স্থানীয় উচ্ছৃঙ্খল লোকজন। গতকাল রোববার দুপুরের দিকে ওই মুক্তিযোদ্ধার নিজ এলাকা চৌদ্দগ্রামের কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। রাতে তার জুতার মালা পরা ও এলাকায় ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়ার ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানায়, মুক্তিযোদ্ধা কানু কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। আওয়ামী লীগের তৎকালীন স্থানীয় এমপি মুজিবুল হকের সঙ্গে বিরোধের কারণে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দেওয়া হয় ওই সময়। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারও করে মজিবুর হকের নির্দেশে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতারা তখন আব্দুল হাই কানুর বাড়ি একাধিকবার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিলেন। রোববার সকালে তাঁকে একা পেয়ে স্থানীয় ১০-১২ জন ব্যক্তি গলায় জুতার মালা দেয়।
ছড়িয়ে হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় জামায়াত সমর্থক প্রবাসে থাকা আবুল হাসেমের নেতৃত্বে অহিদ, রাসেল, পলাশসহ ১০-১২ জন আওয়ামী লীগ আমলে তাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে মুক্তিযোদ্ধা কানুর গলায় জুতার মালা দিয়ে তাকে এলাকা এমনকি কুমিল্লায় থাকতে পারবেন না বলে হুমকি দিচ্ছেন। এ সময় তিনি জুতার মালা সরিয়ে আর এলাকায় আসবেন না বলেও জানান। এ সময় তার ভিডিও ধারণ ও ছবি নেওয়া হয়।
ওই ব্যক্তিরা বলতে থাকেন ‘এক গ্রাম লোকের সামনে মাফ চাইতে পারবেন কিনা?’ অন্যরা বলতে থাকে, ‘কুমিল্লা আউট, এলাকা আউট, এলাকা ছেড়ে দাও।’
ভুক্তভোগী ওই মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিকদের বলেন, ‘হঠাৎ আমাকে একা পেয়ে জোর করে ওরা জুতার মালা গালায় দিয়ে ভিডিও করে। বিচার কার কাছে চাইব, মামলা দিয়ে আর কী হবে।’