অভিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধুকে হারিয়েছি: ড. কামাল হোসেন
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, অভিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধুকে হারিয়েছি। আইন অঙ্গনে যারা তাকে চিনতেন তারা অভিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধুকে হারিয়েছেন। এরকম লোক একজনের পর একজন আমরা হারাচ্ছি, যা পূরণ করা যাচ্ছে না।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে হাসান আরিফের জানাজা শেষে তার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন ড. কামাল হোসেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, যাকে হারিয়েছি তিনি সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হাসান আরিফের ভূমিকা স্মরণীয় ছিল, সেই ধরনের যারা অভিজ্ঞ লোক আইনজীবী হিসেবে এবং সমাজে দরদ নিয়ে যারা ছিলেন তার মধ্যে তিনি অন্যতম। আমি নিজে একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে হারিয়েছি। তার রুহের মাগফিরাত কামনা ও দোয়া করি।
এর আগে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বিকেল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন এ এফ হাসান আরিফ। একই দিনে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ওইদিন তাকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত ১০ নভেম্বর উপদেষ্টাদের দপ্তর পুনর্বণ্টন করে সরকার। ওইদিন ভূমি মন্ত্রণালয় তার অধীনে রাখা হলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে তাকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এ এফ হাসান আরিফ ২০০১ থেকে ২০০৫ সালের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এ এফ হাসান আরিফ ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টে ১৯৬৭ সালে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন। এরপর ঢাকায় এসে বাংলাদেশ হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন।
এ এফ হাসান আরিফ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ, নির্মাণ সালিশ, বাণিজ্যিক সালিশ, অর্থ, ব্যাংকিং এবং সিকিউরিটিজ বিষয়, করপোরেট, বাণিজ্যিক ও ট্যাক্সেশন বিষয়, সাংবিধানিক আইন বিষয়, পাবলিক আস্বাদন, আরবিট্রেশন এবং বিকল্প বিরোধ সমাধানের অন্য পদ্ধতি নিয়ে কাজ করেছেন।