জার্মানির মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ স্যাক্সনি-আনহাল্টের রাজধানী ম্যাগডেবার্গ শহরের একটি ক্রিসমাস মার্কেটের ভিড়ের মধ্যে একটি গাড়ি ঢুকে পড়ে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২ জন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৬৮ জন।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
এদিকে শুক্রবার রাতের এই ঘটনাকে কর্মকর্তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা বলে বর্ণনা করেছেন এবং জানিয়েছেন, চালককে ঘটনাস্থল থেকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্ত চলছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস-সহ আরও অনেকেই এই ঘটনার পরপরই তাদের সমবেদনা জানিয়েছেন। শনিবার তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে তার কার্যালয় ইঙ্গিত দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া পোস্টে শলৎস বলেছেন, “ম্যাগডেবার্গের রিপোর্ট থেকে বোঝা যায় যে ভয়ানক কিছু ঘটেছে। ভুক্তভোগীদের এবং তাদের পরিবারের পাশে আছি আমরা।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা তাদের পাশে এবং ম্যাগডেবার্গের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। এই উদ্বেগজনক সময়ে আমি নিবেদিতপ্রাণ উদ্ধার কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই।”
স্যাক্সনি-আনহাল্টের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তামারা জিসচাং সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে সৌদি আরব থেকে আসা ৫০ বছর বয়সী একজন ডাক্তার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি ২০০৬ সালে জার্মানিতে এসেছিলেন। অবশ্য দেশটির নিরাপত্তা পরিষেবার কাছে তার বিষয়টি অজানা ছিল।
আরেক রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা প্রিমিয়ার রেইনার হ্যাসেলফ স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, নিহতদের মধ্যে একজন শিশু এবং অন্যজন প্রাপ্তবয়স্ক। তিনি আরও বলেন, সন্দেহভাজন হামলার ফলে আরও মৃত্যু হবে কিনা তা তিনি বলতে পারেননি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, রাজধানী বার্লিন থেকে জার্মানির ম্যাগডেবার্গ শহরের দূরত্ব প্রায় ১৩০ কিলোমিটার। বড়দিন উপলক্ষ্যে সেখানে জমজমাট বাজার বসেছিল। বহু মানুষ সেই বাজারের রাস্তায় ভিড় করেছিলেন। চলছিল কেনাকাটা। আচমকা সেই রাস্তায় ভিড়ের মধ্যে উঠে পড়ে চারচাকার একটি গাড়ি। ইচ্ছাকৃত ভাবেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে। ফলে এটিকে হামলা বলে অভিহিত করা হয়েছে। গাড়ির চালক সৌদি আরবের বাসিন্দা হলেও দীর্ঘ দিন জার্মানিতেই প্রবাসী হিসাবে থাকছিলেন। কী কারণে এই ‘হামলা’ তিনি করলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, জনাকীর্ণ রাস্তায় হঠাৎ করেই ঢুকে পড়ে গাড়িটি। এরপর সেটি নির্বিচারে মানুষকে ধাক্কা মারতে মারতে সামনে এগিয়ে যায়। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ার পরও গাড়ির গতি কমেনি।
রাস্তার শুরুর দিকে ৪০০ মিটারের মধ্যে যত জন ছিলেন, তারা সবাই আহত হয়েছেন। অনেকে পড়ে গিয়ে চাকার নিচে পিষ্ট হয়েছেন। গাড়িটি ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরের দৃশ্য আরও করুণ। রাস্তাজুড়ে শুধু মানুষের গোঙানির শব্দ শোনা যায়। সেই ভিডিও ফুটেজও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ রাস্তায় পড়ে ছটফট করছেন, আবার তাদের শুশ্রূষার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।