ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে সর্বাত্মক হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ ছাড়া গত সপ্তাহে আকস্মিক বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় ভয়ংকর হামলা চালায় বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী। অপরদিকে সর্বাত্মক হামলার সাহস না করলেও ইরান ও ইরাকেও হামলার ঘটনা ঘটছে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এমন বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টির ধারাবাহিকতায় এবার অন্য আরেকটি দেশে সর্বাত্মক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইহুদিবাদীরা।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এমন ইঙ্গিত মিলেছে। প্রতিবেদনটিতে ইসরায়েলি পাবলিক ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (কেএএন)বরাত দেওয়া হয়েছে।
কেএএন জানিয়েছে, ইসরায়েল ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাবে ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
গতকাল সোমবার দিনের শুরুতে হুথিদের একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং একটি ড্রোন নিক্ষেপ করার পরে এই ঘোষণা আসে। ইরানের আঞ্চলিক মিত্রদের সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে কেএএন।
ইসরায়েলের সামরিক সূত্র দাবি করেছে, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত আসাদ সরকার এবং লেবাননে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর দুর্বল অবস্থানের কারণে ইরান হুথিদের ওপর ভর করছে। হুথিরা সমগ্র ইরানের অক্ষের পক্ষে ইসরায়েলে আক্রমণ করার ধান্ধা নিয়েছে বলে দাবি নেতানিয়াহুর বাহিনীর। তাই হুথিদের ইসরায়েল আক্রমণের আগেই ব্যবস্থা নিতে চাইছে ইহুদিরা।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গোপন সূত্রে কেএএনকে জানিয়েছে, হুথিদের অগ্রযাত্রা থামাতে গোয়েন্দা শক্তি স্থানান্তর এবং অভিযানের জন্য অপারেশনাল ইউনিট প্রস্তুত করা প্রয়োজন। আর সে দিকেই এগোচ্ছে ইসরায়েল।
প্রসঙ্গত, ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ব্যালিস্টক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। তবে ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে সফলভাবে ভূপাতিত করেছে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সীমান্ত অতিক্রম করার আগেই ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করা হয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করায় শার্পনেলের জন্য সেন্ট্রাল ইসরায়েলে সাইরেন বাজানো হয়েছে। ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা এ হামলা চালিয়েছে।
এর আগে সকালে ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে ইসরায়েল। ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর নৌযান থেকে এটি ভূপাতিত করা হয়েছে।
কেবল ইসরায়েলে হামলা নয়, লোহিত সাগরে দেশটির সংশ্লিষ্ট জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা। মার্কিন সেনা সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ১০০টির বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুতিরা। তাদের হামলার ভয়ে বেশিরভাগ জাহাজ কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ এই দুই নৌপথ এড়িয়ে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছে। এতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে পশ্চিমারা।
হুতিদের হামলার জবাবে বেশ কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে একটি টহল জোট গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র। তবু হুথিদের থামানো যাচ্ছে না। এবার ইসরায়েল হামলা করলে তার সঙ্গে ওই জোটও যুদ্ধে যোগ দেওয়ার আশঙ্কা প্রবল।