চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষার্থীর উপর গুপ্ত হামলার ঘটনায় মূল ফটক অবরুদ্ধ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, এ পর্যন্ত ছয়টি গুপ্ত হামলার অভিযোগ পাওয়া গেলেও কোন দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টায় মূল ফটকে তালা ঝুলায় শিক্ষার্থীরা। সুষ্ঠু তদন্ত না হলে মঙ্গলবার গোটা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অবরোধের ঘোষণা দিয়ে পৌনে ৮টায় কর্মসূচি শেষ করে তারা।
সেখানে উপস্থিত ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী আল মাসনূন বলেন, “এই ধরনের হত্যাচেষ্টাকে শুধুমাত্র গুপ্ত হামলা বলে চালিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা দেখেছি, কি নির্মমভাবে আমাদের ভাইদেরকে মারা হয়েছে। প্রশাসন কোনো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরে থাক, তাৎক্ষণিক কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আক্রান্ত শিক্ষার্থীরা ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে সহকারী প্রক্টর বা প্রক্টর স্যার কেউই কল ধরেননি।”
তিনি আরও বলেন, ‘‘কতটুকু অমানবিক হলে একজন নিরাপত্তাকর্মী ওখানে উপস্থিত থেকেও কোন সহায়তা করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি উত্থাপন করার পর আমাদেরকে ফ্যাসিস্ট ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। শুধুমাত্র লাইটিং করে আর সিসিটিভির দোহাই দিয়ে তারা দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকছেন।’’
ঘটনাস্থলে চবি প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ এসে শিক্ষার্থীদেরকে রবিবারের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। রাতের ঘটনায় প্রশাসন কেন কোনো তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি জানতে চাইলে চবি প্রক্টরের সাথে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হলে এক পর্যায়ে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে অর্থনীতি বিভাগের ১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী হাসান বলেন, ‘‘১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের জন্য ব্যস্ততা থাকবে বিধায় প্রশাসনকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। তার মধ্যে এই সকল গুপ্ত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার না হলে মঙ্গলবার পুরো বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধ করা হবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘শুধুমাত্র সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা বৃদ্ধি করলেই হবে না৷ এই গুপ্ত হামলার বিচার করতে হবে। তা না হলে আমরা সন্দেহ করতে বাধ্য হব যে, প্রশাসনেরও এই হামলাগুলোর পেছনে দায় আছে।’’
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে আনুমানিক সাড়ে এগারোটায় চবি ক্যাম্পাসের পুরাতন অডিটোরিয়াম এলাকায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের দুই শিক্ষার্থী মহিবুল ইসলাম ও নীরব আহমেদের উপর অতর্কিতে হামলা করে মুখোশধারী কিছু ব্যক্তি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, ঘটনাস্থলের কাছেই একজন নিরাপত্তাকর্মী অবস্থান করলেও আক্রমণের শিকার শিক্ষার্থীদের কোনপ্রকার সহায়তা করেনি।