ভারতের তেলেগু ফিল্মের অভিনেতা আল্লু অর্জুনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির হায়দরাবাদ পুলিশ। গত ৪ ডিসেম্বর হায়দেরাবাদে ‘পুষ্পা টু’ প্রিমিয়ারে পদপিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয় ও আহত হন বেশ কয়েক জন। সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন আল্লু অর্জুন।
এই ঘটনাতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ জানিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে এক সহকারী কমিশনারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল আল্লুকে হেফাজতে নিতে তার বাড়িতে পৌঁছায়। এরপর নায়কের জুবিলি হিলসের বাসা থেকে চিক্কাদপল্লী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আল্লুর পরিবারের সদস্যরাও। সেখান থেকে একটি গাড়িতে করে আল্লুকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৪ ডিসেম্বর রাতে হায়দরাবাদের সন্ধ্যা সিনেমা হলে অর্জুন অভিনীত সিনেমা ‘পুষ্পা ২’-এর প্রিমিয়ার ছিল। তেলুগু অভিনেতা সেখানে পৌঁছতেই দর্শক এবং অনুরাগীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। ভিড়ের চাপে ভাঙে প্রেক্ষাগৃহের মূল গেট। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক নারীর। গুরুতর আহত অবস্থায় এখনও চিকিৎসাধীন ওই নারীর সন্তান।
অভিযোগ, অভিনেতার টিম অথবা ওই সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে পর্যাপ্ত তথ্য দেয়নি। ফলে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ আগে থেকে মোতায়েন করা যায়নি।
হায়দরাবাদ পুলিশ জানায়, সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ, অর্জুন এবং তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা টিমের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মৃত নারীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই চিক্কাদপল্লী থানায় এ মামলা দায়ের করে পুলিশ।
এর আগে এ ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত করে আল্লু অর্জুনসহ নায়কের নিরাপত্তারক্ষী ও থিয়েটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে নিহতের পরিবার। পরে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনে মামলা হয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। এরপর আল্লু অর্জুনকে ছাড়া তার নিরাপত্তারক্ষী ও থিয়েটার কর্তৃপক্ষের তিন সদস্যকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করে হায়দরাবাদ পুলিশ। যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাদের মধ্যে একজন সেই থিয়েটারের মালিক এম সন্দীপ, একজন ম্যানেজার এম নাগার্জু এবং আল্লুর নিরাপত্তা প্রধান গন্ধকাম বিজয় চন্দর।
কিন্তু এর মধ্যে কোনোক্রমে গ্রেপ্তারের হাত থেকে বেঁচেই গিয়েছিলেন আল্লু। ভারতীয় গণমাধ্যমে এও উঠে এসেছে, আল্লু অর্জুন মামলা বাতিলের জন্য গত ১১ ডিসেম্বর একটি প্রতিবেদনও দাখিল করেছিলেন এবং গ্রেপ্তার এড়াতে কিছু আইনি প্রক্রিয়া স্থগিতেরও অনুরোধ করেন।
কিন্তু পুলিশ পালটা জানিয়ে দেয়, ঘটনার দিন রাত সারে নয়টার দিকে অর্জুন প্রেক্ষাগৃহে আসেন। তার আগমনের খবর তিনি আগে থেকে অবগত করেননি। প্রবেশদ্বারের বাইরে ১৫-২০ মিনিট বাইরে কাটিয়ে দেন আল্লু। এ সময় শত শত লোক তাকে দেখার জন্য ছড়িয়ে পড়ে, নিরাপত্তা দলকে ঠেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে।
অভিযোগ, অভিনেতার টিম অথবা ওই প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশকে পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া হয়নি। ফলে প্রেক্ষাগৃহে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ আগে থেকে মোতায়েন করা যায়নি। যে কারণে দায় চেপে গেল আল্লু অর্জুনসহ বাকিদের বিরুদ্ধেও। ফলস্বরূপ এখন গ্রেপ্তার হতে হল সবাইকেই।