প্রকাশ: সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:১০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সিরিয়ার বিদ্রোহীদের বিজয়ের পর বাশার আল-আসাদের ভয়ংকর ও কুখ্যাত কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন প্রায় দেড় লাখ বন্দি। এখানে লাখো বিরোধী সমর্থকের ওপর নির্যাতন ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।
বাশারের শাসনামলে কারাগারগুলো ছিল নির্মম নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতীক। এই কারাগারগুলো থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস।
মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন হালা, যিনি ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কারাগারে তিনি নামের বদলে পরিচিত ছিলেন ‘১১০০’ হিসেবে। কারাগারের দুঃসহ স্মৃতি তুলে ধরে হালা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, এটি সত্যি যে আমরা মুক্ত। এটি যেন আমার নতুন জন্ম।’
অপর এক বন্দি সাফি আল-ইয়াসিনের মুক্তি ছিল তার জীবনের সেরা মুহূর্ত। আলেপ্পোর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি বলেন, ‘এটি যেন আমার জীবনের প্রথম দিন।’
সাফি ২০১১ সালে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে ৩১ বছরের সাজা পেয়েছিলেন এবং ১৪ বছর ধরে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, বাশারের কারাগারগুলোতে বন্দীদের ব্যাপক নির্যাতন, অনাহার, এবং শারীরিক-মানসিক অত্যাচারের প্রমাণ রয়েছে। সাইদিনায়ার কুখ্যাত কারাগারকে ‘মানব কসাইখানা’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল।
মুক্তিপ্রাপ্তদের প্রত্যেকের জীবন যেন নতুন করে শুরু হলো। মাহের নামের আরেক বন্দি বলেন, ‘আমরা দরজা ভেঙে বেরিয়ে বিপ্লবীদের আলিঙ্গন করলাম, আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় সিজদাহ করলাম।’
বিদ্রোহীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মুক্তিপ্রাপ্তরা বলছেন, ‘আমরা যেন নতুন জীবনে ফিরে এসেছি।’
বাশার আল-আসাদের পতনের মধ্য দিয়ে সিরিয়া একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের দুঃসহ অভিজ্ঞতা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে এবং বাশার শাসনের নির্মম বাস্তবতা সামনে এনেছে।
বিদ্রোহীরা দামেস্ক দখলের পর প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পালিয়ে রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন।