বৃহস্পতিবার ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১ পৌষ ১৪৩১

শিরোনাম: রাজধানীর সচিব নিবাসেও আগুন   সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেয়ার সময় বাড়ল   দেশে ফিরেই নতুন বার্তা দিলেন মিজানুর রহমান আজহারী   ভারত থেকে চোখ রাঙিয়ে বাংলাদেশ শাসনের চিন্তা করবেন না   হাসিনা ও তার দোসরদের নথি চাওয়ায় সচিবালয়ে আগুন: রিজভী   বিএনপিকর্মী হত্যায় কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি গ্রেপ্তার    সিরিয়ায় অতর্কিত হামলায় ১৪ পুলিশ নিহত   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
দেশে রোলস রয়েস ১২টি, ছয় মাসে এসেছে আটটি
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭:১২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

দেশে সবচেয়ে দামি গাড়ি এখন রোলস রয়েস

দেশে সবচেয়ে দামি গাড়ি এখন রোলস রয়েস

বিশ্বের সবচেয়ে অভিজাত গাড়ি বলা হয় রোলস রয়েসকে। একটা সময় এই গাড়ি বাংলাদেশে দেখা যেত না। তখন দেশে সবচেয়ে দামি গাড়ি ছিল ফেরারি। তবে ফেরারির দিন শেষ, এখন বাংলাদেশে ব্যবহৃত তালিকায় সবচেয়ে দামি গাড়ি ‍হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে রোলস রয়েস।

বাংলাদেশে এখন মোট ১২টি রোলস রয়েস রয়েছে। তার মধ্যে এ বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর অর্থাৎ ছয় মাসের মধ্যেই এসেছে আটটি রোলস রয়েস গাড়ি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ছয় মাসের ব্যবধানে আটটি রোলস রয়েস গাড়ি এনেছেন দেশের বিভিন্ন শিল্প গ্রুপ ও গাড়ি ব্যবসায়ীরা। আর এই আটটি গাড়িই দেশে গত দুই দশকে বাণিজ্যিকভাবে আমদানি হওয়া সবচেয়ে দামি গাড়ির তালিকায় রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ৬ মাসে আসা গাড়ির সব কটিই রোলস রয়েসের বৈদ্যুতিক গাড়ি ‘স্পেক্টার’। এসব গাড়ির প্রতিটির কেনা দাম চার থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা। বৈদ্যুতিক গাড়ি হওয়ায় শুল্ক–করের হার ছিল ৯০% এর কাছাকাছি। তাতে প্রতিটি গাড়িকে শুল্ক–কর দিতে হয়েছে আরও ৪ কোটি টাকার বেশি। এই হিসাবে রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়ির দাম পড়েছে সাড়ে ৮ কোটি টাকারও বেশি। তবে বৈদ্যুতিক গাড়ি না হলে এই শুল্ক–কর দিতে হতো ৮০০% এর বেশি বা ৩৮ কোটির টাকার বেশি।

তথ্য বলছে, ব্রিটিশ বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোলস রয়েস গত বছর প্রথমবারের মতো বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারজাত শুরু করে। বাজারজাত শুরুর পর বাংলাদেশ থেকে আটটি গাড়ি কেনার জন্য বুকিং দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে রোলস রয়েসের সবচেয়ে কম দামি কুলিনান ব্র্যান্ডের গাড়িতে শুল্ক–কর আসে অন্তত ২৫–৩৯ কোটি টাকা। তবে বৈদ্যুতিক গাড়িতে শুল্ক–কর অনেক কম। এ সুযোগে রোলস রয়েস গাড়ি আমদানি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে রোলস রয়েসের আটটি গাড়ি দেশে পৌঁছেছে, যেগুলোর নির্মাণ সাল ২০২৪। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে এসেছে চারটি। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এসেছে আরও চারটি এসেছে বলে জানিয়েছে ওই প্রতিবেদন।

যারা এনেছে রোলস রয়েস

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৬ মাসের মধ্যে আসা আটটি রোলস রয়েসের ৩টি এনেছে যথাক্রমে বসুন্ধরা মাল্টি ট্রেডিং লিমিটেড, ফারইস্ট স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও ইসলাম নিট ডিজাইনস লিমিটেড। বাকি পাঁচটি আমদানি করেছে ঢাকার প্রিয়াঙ্কা ট্রেডিং লিমিটেড, কন্টিনেন্টাল মোটরস, এশিয়ান ইমপোর্টস লিমিটেড, এ এম কর্পোরেশন ও ফোর হুইলস মোটরস।

শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের ব্যবহারের জন্যই অভিজাত এই গাড়ি আমদানি করেছে। তবে গাড়ির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতার কাছ থেকে বুকিং নিয়ে আমদানি করেছে বলে জানা গেছে।

গাড়ি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে দুজন ক্রেতার নাম জানা গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তার একটির ক্রেতা বেক্সিমকো পরিবার, আরেকটি শীর্ষস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক ডিবিএল গ্রুপ। তবে, গত ৫ আগস্ট সরকারের পটপরিবর্তনের পর বেক্সিমকো পরিবারের কেনা গাড়িটি আগুনে পুড়ে যায় বলে জানা গেছে।

বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আমদানি না হলেও কূটনৈতিক ও শুল্কমুক্ত সুবিধায় দেশে আগেও রোলস রয়েস গাড়ি আমদানির রেকর্ড রয়েছে এনবিআরের কাছে। গত দুই দশকের (২০০৪–২৩) তথ্য বলছে, এ সময়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় দুটি রোলস রয়েস দেশে আনা হয়েছে। তার মধ্যে ২০১৫ সালে ৬,৬০০ সিসির নতুন একটি রোলস রয়েস এনেছিল দুবাই এভিয়েশন কর্পোরেশন। ২০২০ সালে ৬,৭৪৯ সিসির আরেকটি রোলস রয়েস এনেছিল ঢাকার সৌদি দূতাবাস। এই দুটি গাড়ি এখন কোথায় আছে তা জানা যায়নি।

এছাড়া দুটি রোলস রয়েস জব্দের রেকর্ড রয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কাছে। উত্তর কোরিয়ার এক কূটনীতিক মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ২০১৫ সালে একটি রোলস রয়েস গাড়ি আমদানি করেছিলেন। গাড়িটির বাজারমূল্য ৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অবশ্য শুল্ক–করই ছিল ২২ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের রুপালি রঙের ৬,৬০০ সিসির এই গাড়ি ঢাকার কমলাপুরের আইসিডি থেকে জব্দ করা হয়। আর ২০২২ সালে চট্টগ্রামের ইপিজেডের একটি প্রতিষ্ঠান শুল্কমুক্ত সুবিধায় আরেকটি রোলস রয়েস গাড়ি আমদানি করেছিল। তবে শুল্কায়নের আগে গাড়িটি ঢাকায় সরিয়ে নেওয়ায় তা জব্দ করেছিল শুল্ক গোয়েন্দা। পরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এক বিচারাদেশে গাড়িটি খালাসে ২৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা শুল্ক–কর পরিশোধের নির্দেশ দেয়। জরিমানা করা হয় ৫৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গাড়ি খালাসে শুল্ক–কর, জরিমানাসহ ৮৫ কোটি টাকা দেওয়ার আদেশ দেয় কাস্টমস। এ নিয়ে মামলা চলছে।  এই গাড়ি দুটি এখনো কাস্টমস গোয়েন্দার হেফাজতে রয়েছে। 

সব মিলিয়ে বাংলাদেশে মোট ১২টি রোলস রয়েস গাড়ি আমদানির তথ্য রয়েছে।

রোলস রয়েস কেন অভিজাত

আমদানিকারকেরা জানান, রোলস রয়েস গাড়ির নান্দনিক নকশা, গাড়ির ভেতরের ইন্টেরিয়র, স্বয়ংক্রিয় চাকার মতো বহুবিধ বৈশিষ্ট্য এই ব্র্যান্ডকে বিশ্বজুড়ে আলাদা করে তুলেছে। আবার দীর্ঘ সময় ধরে কোম্পানিটি আভিজাত্য ধরে রাখতে সবার কাছে গাড়ি বিক্রি করত না। বিক্রির ক্ষেত্রে নানা শর্ত দিত। এসব কারণেই রোলস রয়েস আভিজাত্যের তালিকায় নাম লেখায়। রোলস রয়েসের বৈদ্যুতিক গাড়ি স্পেক্টার মাত্র ৪ দশমিক ৪ সেকেন্ডে ৬০ মাইল গতিতে চলতে পারে। এই গাড়ির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে—নিঃশব্দে চলার ক্ষমতা। আবার খুব ছোট জায়গাতেও খুব সহজে চালানো যায় গাড়িটি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]