জীবন চলার পথে দৌড়াতে গিয়ে অনেক সময়ে হাঁপিয়ে ওঠেন। প্রতিনিয়ত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা গ্রাস করতে থাকে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের অনেকে এই ডিপ্রেশনে ভুগছেন। মন ভালো রাখতে হাতের সামনে মুখরোচক খাবার যা পান, তা-ই খেয়ে ফেলেন। ফলস্বরুপ দেহের ওজন এবং মানসিক চাপ বাড়তে থাকে।
কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাবারেরও যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। তবে যেকোনো খাবার খেলেই চলবে না।
তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন পানীয়গুলো পান করবেন।
ডার্ক চকোলেট ড্রিংকস
ডার্ক চকোলেটে এমন যৌগ রয়েছে যা ইতিবাচকভাবে আপনার মেজাজ এবং মস্তিষ্কের ফাংশনকে প্রভাবিত করতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ফ্ল্যাভোনয়েডে সমৃদ্ধ ডার্ক চকোলেট মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হলে ডার্ক চকোলেট ড্রিংক মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করার একটি আনন্দদায়ক উপায় হতে পারে।
গ্রিন-টি
গ্রিন টি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাবসহ অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য বিখ্যাত। এই পানীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, বিশেষ করে এর ক্যাটেচিন নামক উপাদান স্ট্রেস কমাতে এবং শিথিলতা বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। গ্রিন টি-তে থাকা এল-থেনাইন নামক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড শিথিলতাকে উৎসাহিত করে এবং সেরোটোনিন এবং ডোপামিনের মতো শান্ত নিউরোট্রান্সমিটারের উৎপাদন বাড়িয়ে উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
হলুদ মিশ্রিত দুধ
হলুদ মিশ্রিত দুধ যা কি না গোল্ডেন মিল্ক নামেও খুবই পরিচিত। এটি হলুদ, দুধ, দারুচিনি এবং আদার মতো অন্যান্য মসলা দিয়ে তৈরি সুস্বাদু পানীয়। হলুদে রয়েছে কারকিউমিন, শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। গবেষণায় দেখা যায়, কারকিউমিন মস্তিষ্ক থেকে প্রাপ্ত নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর এবং সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়িয়ে মেজাজ উন্নত করতে সাহায্য করে যা ডিপ্রেশনে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে হ্রাস পায়। হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য প্রদাহজনিত ডিপ্রেশনের উপসর্গ উপশম করতে খুবই কার্যকরী।
ক্যামোমাইল টি
দিনভর কাজের ক্লান্তি, অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর করতে অনেকেই ক্যামোমাইল চায়ে চুমুক দিয়ে থাকেন। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ এই পানীয়টি স্নায়ুর উত্তেজনা প্রশমিত করতেও সাহায্য করে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ক্যামোমাইলের মধ্যে সিডেটিভ জাতীয় কিছু উপাদান রয়েছে। অনিদ্রাজনিত সমস্যা থাকলেও পুষ্টিবিদেরা ক্যামোমাইলের চা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কুসুম গরম দুধ
কুসুম গরম দুধ ঘুম এবং পেশীর শিথিলতা বাড়াতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। দুধে ট্রিপটোফ্যান রয়েছে, এটি একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড যা শরীর সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিনে রূপান্তরিত করে যা মেজাজ এবং ঘুম নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয়। এই অ্যামাইনো অ্যাসিড সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, যা মেজাজ উন্নত করে এবং সুস্থতার অনুভূতি বাড়ায়। দুধ ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি এর একটি ভালো উৎস, যার উভয়ই মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।