সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যের ডিজি অধ্যাপক ডা. আবু জাফর, ছবি : সংগৃহীত
সারা দেশে প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এই অধিক মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেছেন, দেরি করে হাসপাতালে আসার কারণেই মৃত্যুটা বেশি হচ্ছে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
মহাপরিচালক বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা জটিল পরিস্থিতিতে না পড়লে সাধারণত হাসপাতালে আসছে না। এই দেরি করার কারণে রোগী খুব অল্প সময়ে শকে চলে যাচ্ছে। রোগীর পেটে ও ফুসফুসে পানি আসছে। এমন একটা সময়ে তারা হাসপাতালে আসছেন, যখন আর তাদের জন্য কিছু করা যাচ্ছে না।
ডা. আবু জাফর বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মারা যাচ্ছে ঢাকায়, যাদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছর। তবে চট্টগ্রামে শিশু ও বৃদ্ধদের মৃত্যুহার তুলনামূলক বেশি। এর কারণ হলো ডেঙ্গু হলে মানুষ গুরুত্ব কম দিচ্ছে, তাই মৃত্যুটা বাড়ছে।
ডেঙ্গুর পাশাপাশি দেশে চিকনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জিকা ও চিকনগুনিয়া নিয়ে অনেক বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নেই। জিকা ভাইরাসে আক্রান্তদের ৯০ শতাংশর ক্ষেত্রেই কোনো লক্ষণই দেখা দেয় না। এছাড়া এই রোগে মৃত্যু হার শূন্য। তবে এ বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।
এর আগে গতকাল রোববার (১ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়,গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে, এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮৮২ জন।
এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৮৮২ জন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৬৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩৩ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৪০ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১০৪ জন, খুলনা বিভাগে ৯১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৩ জন, রংপুর বিভাগে ১১ জন এবং সিলেট বিভাগে আটজন ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে গত একদিনে সারা দেশে ১১১০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮৮ হাজার ৯৮৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৯২ হাজার ৩৫১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৯৪ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।