আলোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলম ও পরিবারের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে গ্রুপটির চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলমের নামে থাকা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চার কোটি ৯৬ লাখ ও তার ভাই আব্দুস সামাদের আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের দুই কোটি ৪৬ লাখ শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এই আদেশ দেন।
এর আগে এক হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা খেলাপি হওয়ায় গ্রুপটির প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের বিরুদ্ধে মামলা করে জনতা ব্যাংক।
মামলাটি আমলে নিয়ে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, চার ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী ও এক পরিচালকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দেন আদলত।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারি রেজাউল করিম বলেন, ‘এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের বিরুদ্ধে এক হাজার ৯৬৩ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি মামলা করেছে জনতা ব্যাংক।’
মামলায় গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভিন, ভাই মোহাম্মদ রাশেদুল আলম, মো. আবদুল্লাহ হাছান, আব্দুস সামাদ (লাবু) ওসমান গণি, মো. শহিদুল আলম, ভাইয়ের স্ত্রী শাহানা ফেরদাউস ও গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুছ ছবুর ও পরিচালক মিশকাত আহমদকে বিবাদী করা হয়েছে।
গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন ছাড়াও মামলায় গ্রুপটির আরও ১৩ প্রতিষ্ঠানকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১০ সালে জনতা ব্যাংক সাধারণ বীমা শাখা থেকে ঋণ ভোগ্যপণ্য আমদানির জন্য ঋণ ২৭০ মিলিয়ন ডলার (২৭০ কোটি টাকা) সুবিধা নেয় গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন। এলএটিআর সুবিধায় নেওয়া এ ঋণ বছরান্তে পরিশোধ করার শর্ত থাকলেও গত ১৫ বছরে তা পরিশোধ করা হয়নি। বরং বছর বছর ঋণসীমা ও সুদ বেড়ে বর্তমানে সুদাসলে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৬৩ কোটি ৫৪ লাখ ৬১ হাজার ৫৫৯ টাকা। এর মধ্যে একাধিকবার ঋণটি পুনঃতফসিলও করেছে ব্যাংক।
জনতা ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) ও সাধারণ বীমা শাখার ইনচার্জ বাদল কান্তি দাশ বলেন, সর্বশেষ ঋণটি আবারও পুনঃতফসিলের প্রস্তাব দিলে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে তা নাকচ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঋণের বিপরীতে ১৬ টি তফসিলে এস আলম গ্রুপের চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় এবং গাজীপুরের মোট এক হাজার ৮৬০ শতাংশ জমি বন্ধক রয়েছে। যার সর্বোচ্চ মূল্য ৩৫৮ কোটি টাকা। এ জমি বিক্রি করে খেলাপি ঋণ পুরোপুরি আদায় সম্ভব নয়। তাই পাওনা আদায়ে মামলা করা হয়েছে।