প্রকাশ: রোববার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩:৫৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
যুক্তরাজ্যে আবাসন খাতে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের কয়েকজন মন্ত্রীসহ রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীর নামে বিপুল সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। এই সম্পত্তির মোট মূল্য ৪০ কোটি পাউন্ডেরও বেশি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এবং ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম অবজারভারের যৌথ অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব সম্পত্তি বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দ্য অবজারভার হলো পুরোনো ও প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। গতকাল শনিবার গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে ওই বাংলাদেশিদের সম্পত্তির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
অবজারভার ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের অনুসন্ধানে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনা–ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের নামে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ফ্ল্যাট থেকে শুরু করে সুবিশাল অট্টালিকা পর্যন্ত রয়েছে। সম্পত্তির অনেকগুলো কেনা হয়েছে যুক্তরাজ্য ও দেশটির বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অফশোর কোম্পানি নামে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা ওই সম্পত্তির অনেকগুলোর মালিকানায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও অনেক সম্পত্তির মালিকানা রয়েছে।
মেফেয়ার এলাকায় গ্রোসভেনর স্কয়ারে সালমানের পরিবারের সদস্যদের সাতটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে সালমানের ছেলে আহমেদ শায়ান রহমান ২০২২ সালের মার্চ মাসে ২ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন। একই এলাকায় ৩ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ড মূল্যের আরও একটি ফ্ল্যাট তাঁর মালিকানায় রয়েছে। এদিকে নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের লন্ডনের কেনসিংটনে পাঁচটি সম্পত্তি রয়েছে। এসব সম্পত্তির মোট মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ড।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে অর্থ পাচার, দুর্নীতি ও অবৈধ আয়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বাংলাদেশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে তদন্ত করছে। নজরুল ইসলাম মজুমদারের সম্পত্তিও জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে এই অনুসন্ধানের ফলে যুক্তরাজ্যে অর্থ পাচার ও সম্পত্তি কেনার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এ বিষয়ে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কেও এর প্রভাব পড়তে পারে।