প্রতি বছরের মতো এবারও রংপুর শহরের আমাশু কুকরুল সড়কের পাশে নিউ জুম্মাপাড়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিনদিনব্যাপী রংপুর জেলা ইজতেমা। বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ আদায়ের পর আম বয়ানের মাধ্যমে এই ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ইজতেমার দ্বিতীয় দিন, আজ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজে প্রায় লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেন।
শুক্রবার, জুমার নামাজ দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হলেও সকাল ১০টার পর থেকেই ইজতেমা মাঠে মুসল্লিদের ঢল নামতে থাকে। একসঙ্গে বড় জামাতে জুমার নামাজ আদায় করে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করেন। রংপুর জেলার আশেপাশের উপজেলা ও মহানগরী থেকে মুসল্লিরা সকাল থেকেই ইজতেমায় উপস্থিত হন।
রংপুর নগরীর ধাপ এলাকার আমানত আলী বলেন, ‘গত বছরও রংপুরের ইজতেমায় জুমার নামাজ পড়েছি। এবারও অনেক মানুষের সঙ্গে নামাজ আদায় করলাম। খুব ভালো লাগছে নামাজ আদায়ের পর। এটি আল্লাহর রহমত এবং আমার সৌভাগ্য যে, এত মানুষের সাথে নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করেছেন।’ বাবুল ইসলামও বলেন, ‘সুযোগ পেলেই এরকম বড় জামাতে নামাজ আদায় করার চেষ্টা করি। ছেলেকে নিয়ে এসেছি, খুব ভালো লাগছে।’
আব্দুল জলিল নাতিকে সঙ্গে নিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। তিনি জানান, ‘জুমার নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে সকালেই এসেছি। নাতিসহ নামাজ আদায় করতে পেরে ভালো লাগছে।’ কাউনিয়া থেকে আসা রহমান মোল্লা বলেন, তিনি ও তার পরিবার জুমার নামাজ আদায় করেছেন।
এবারের ইজতেমায় রংপুর জেলার ৮ উপজেলা ও মহানগরী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ অংশ নিয়েছে।
তারিকুল ইসলাম তারেক জানান, ‘এবার ইজতেমার মাঠটি সমতল হওয়ায় এবং বড় হওয়ার কারণে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত পালনে কোনো অসুবিধা হয়নি। একসঙ্গে অনেক মুসল্লির নামাজ আদায় খুবই তৃপ্তির বিষয়।’ ইজতেমা মাঠে তিনদিন অবস্থানরত মুসল্লিরাও মাঠের আয়োজনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, ইজতেমা উপলক্ষে এবং মাঠে জুমার নামাজ আদায়ের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও রয়েছেন সদস্যরা। প্রশাসন ও ইজতেমা আয়োজকদের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও স্কাউট সদস্যরা তৎপর রয়েছেন, যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
ইজতেমার শুরুদিনে পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী মাঠ পরিদর্শন করেন এবং মুসল্লি ও আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, ‘ইজতেমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আয়োজকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই। তবে, নিরাপত্তা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।’
শনিবার সকাল ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর হেদায়েত ও শান্তি কামনা করা হবে এবং আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে রংপুরের তিনদিনব্যাপী জেলা ইজতেমা শেষ হবে।