বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কিছু মানুষ জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করেছে। এমন কিছু কথা বলা হচ্ছে, মনে হচ্ছে, জাতিকে পুরোপুরি নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগুলো বন্ধ করা দরকার। জাতি বিভক্ত হলে যে চেতনা নিয়ে মানুষ প্রাণ দিয়েছে তা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘আক্রমণের মুখে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান’ শীর্ষক এ মতবিনিময়ের আয়োজন করে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই মুহূর্তে যে কোনো হঠকারিতা আমার মনে হয় জাতির জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে। আমরা যেন এমন কিছু না করি। ভারতে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট শক্তি সেখানে বসে কলকাঠি নাড়ছে। যেন বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে সেটি নস্যাৎ হয়ে যায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে আজ কথা বলতে হবে, বিশেষত ৫ আগস্টের পরে, যখন কি না আমরা ফ্যাসিস্টমুক্ত একটি দেশে বসবাস করছি। ভাবতে পারিনি। গত ১৫ বছর আমরা সবসময় ভয়ে ছিলাম, কিছু লেখার জন্য কখন আবার কারাগারে যেতে হয়। এখনো একই বিষয়ে কথা বলতে হবে, সেটা আশা করিনি। ৫৩ বছর পরে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরে, কথা বলতে হচ্ছে সংবাদপত্রের ওপর আক্রমণের কারণে, এটি দুর্ভাগ্যজনক। আমি এর তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা জানাই। আমাদের লড়াই তো বাকস্বাধীনতা আর মুক্ত মতপ্রকাশের জন্য।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত সরকার যে কোনো সরকারের চেয়ে ভালো। সে যে-ই হোক, যে ই আসুক। দেশে গণতন্ত্রের চর্চা হোক, যেটি গত ৫৩ বছরেও হয়নি। সেই চর্চার মধ্য দিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা যে কোনো মূল্যে মানুষের, সংবাদমাধ্যমের ও ভোটের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।
সভায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।