অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘আমরা আমাদের ব্যর্থতা স্বীকার করি। আমরা শিখেছি এবং ব্যর্থতা কাটানোর চেষ্টাও করছি। আমরা আরো চেষ্টা করব সবাইকে নিয়ে সামনে এগোনোর। কিন্তু হঠকারিতা এবং ছাত্রদের অন্যায্যতার চেষ্টা এ জাতিকে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ বিষয়ে জানান।
মুক্তিযুদ্ধের পরের দশ-পনেরো বছরের ইতিহাস মুক্তিযোদ্ধাদের একে অপরকে হত্যার ইতিহাস দাবি করে মাহফুজ আলম লিখেছেন, যারা চায়নি বাংলাদেশ শক্ত ভিতের উপর মাথা উচুঁ করে দাঁড়াক, তারা মুক্তিযোদ্ধাদের একে অপরকে দিয়ে হত্যা করিয়েছে। তাদের নিজেদের ভুল ছিল না তা নয়, কিন্তু আমাদের মুক্তিযোদ্ধাগণের একের পর এক হত্যা বাংলাদেশকে কীভাবে পিছিয়ে দিল, তা ইতিহাস একদিন বলবেই।
এবারের আন্দোলন সাহসী ছাত্র তরুণদের নেতৃত্বে জনগণের আন্দোলন মন্তব্য করে তিনি আরও লেখেন, একটি দল এবং দেশি-বিদেশি সুযোগ সন্ধানী এস্টাবলিশমেন্ট গত তিন মাসে ছাত্রদের ভিলিফাই (অপমান) করেছে, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন দিয়ে ছাত্রদের মধ্যে বিভেদ ঘটিয়েছে, অন্য একটি তরুণ দলকে লেলিয়ে দিয়েছে ছাত্রদের বিরুদ্ধে, তদুপরি ছাত্রদের সঙ্গে সম্মানজনক ভাবে ডিল তো করেইনি, বরং ছাত্রদের তারা শত্রু গণ্য করেছে। তার পরিণতি কি ভালো হচ্ছে, বা হবে?
উপদেষ্টা মাহফুজ আলম লেখেন, মনে রাখতে হবে, বিদেশি শক্তির কোনো সাধ্য নাই এ দেশের মানুষকে পদানত করার। কিন্তু, গোলামির মানসিকতার কিছু গাদ্দার আর হঠকারীর এ শক্তি ঠিকই আছে। তারা গত তিন মাসে তা দেখাল। ছাত্রদের আজ সংঘাতের মুখে ঠেলে দিয়ে হত্যার মাধ্যমে ছাত্রদের বৈধতার সঙ্কট হলে, যারা যারা লাভবান হবে, তারা সবাই এ উসকানি এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার সঙ্গে জড়িত। ধীরে ধীরে আমরা সবই বলব। অথবা, আপনারা চোখ খুললেই দেখতে পাবেন।
তারমতে বাম এবং ডান মানসিকতার কতিপয় নেতৃত্ব বা ব্যক্তিগণ অভ্যুত্থানে এবং পরবর্তীতে সরকারে নিজেদের শরিকানা নিশ্চিত না করতে পেরে উন্মত্ত হয়ে গেছেন। তাদের উন্মত্ততা, বিপ্লবী জোশ এবং উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড দেশটাকে অস্থির করে রেখেছে।
তিনি লেখেন, অনেক মিত্রই আজ হঠকারীর ভূমিকায়। আমরা আমাদের ব্যর্থতা স্বীকার করি। আমরা শিখেছি এবং ব্যর্থতা কাটানোর চেষ্টাও করছি। আমরা আরও চেষ্টা করব সবাইকে নিয়ে এগুনোর। কিন্তু, হঠকারিতা এবং ছাত্রদের অন্যায্যতার চেষ্টা এ জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। হঠকারিতা, উসকানি, ছাত্র-তরুণদের মধ্যে বিভেদ ও বিরোধ তৈরি, অভ্যুত্থানের শক্তিকে প্রতিক্রিয়াশীল করে তোলার অপচেষ্টা- সবই ব্যর্থ করে দেওয়া হবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও লিখেন, আমরা ৫ আগস্টের সকালের মতন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছি। এবারের সাংগঠনিকভাবে গড়ে ওঠা ঐক্য দীর্ঘস্থায়ী মুক্তির সুযোগ তৈরি করবে, ইনশাআল্লাহ।