প্রকাশ: সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:৪৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
জনপ্রতি ১০০০ টাকা দিয়ে ঢাকা গিয়ে এক লাখ টাকা পাবে, এমন আশায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি কমলনগর ও রায়পুর থেকে কয়েক শতাধিক মহিলা-পুরুষ ঢাকার শাহবাগের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিলেই মিলবে সর্বনিম্ন এক থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ। শর্ত অনুযায়ী এ ঋণ পেতে যোগ দিতে হবে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত একটি সমাবেশে।
এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস রামগতি থেকে ছেড়ে গেছে। এছাড়াও যে যার মতো করে বিভিন্নভাবে যাচ্ছেন। একপর্যায়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়। ঢাকাগামী বেশ কয়েকজন যাত্রীসহ আরো দুটি বাস আটক করেন স্থানীয়রা। পরে রামগতি থানা পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।
একইভাবে কমলনগর থেকে একটি বাস ও ১০টি মাইক্রোবাস ঢাকা শাহবাগের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। খবর পেয়ে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও ছাত্র-জনতা তাদের আটক করে।
যাত্রীরা বলেন, ঢাকায় গিয়ে আন্দোলন করলে বিনে লাভে এক লাখ টাকা করে নিঃশর্তে ঋণ দেওয়া হবে তাদের। কেউ বলছেন, তারা প্রতিজনে এক হাজার টাকা করে দিয়েছেন। তার বিনিময়ে ঢাকা শাহবাগে গেলে এক লাখ টাকা করে পাবেন। তবে কে বা কাদের টাকা দিয়েছেন সেটি বলতে পারছেন তারা। কিসের সভা তাও জানেন না তারা। শুধু ঢাকা শাহবাগে যাবে আর এক লাখ টাকা পাবে। এজন্য জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে দিয়েছেন।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ নামে একটি হ্যান্ড বিল পাওয়া গেছে যাত্রীদের হাতে। সেখানে লেখা আছে লুণ্ঠিত অর্থ উদ্ধার করব বিনা সুদে পুঁজি নিব। অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা শিরোনাম দুর্নীতিবিরোধী বিশেষ আইন প্রণয়নের দাবিতে আগামী ২৫ নভেম্বর ঢাকা শাহবাগ মোড়ে অবস্থার কর্মসূচি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিনা সুদে বিনা জামানতে এক লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত পুঁজি পেয়ে দারিদ্র্য মুক্তিতে আগ্রহী সর্বস্তরের জনগণকে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জনান অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের আহ্বায়ক আ ব ম মোস্তফা আমিন।
রামগতি থানার ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, রাত ১০টার পর থেকে বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী বাসযোগে বিভিন্নভাবে রামগতি থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে তারা দুটি বাস আটক করেন। বর্তমানে ওই দুটি বাস পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এবং বেশকিছু যাত্রীও পুলিশি হেফাজতে আছে।
এর আগে গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তাদেরকে পুলিশি হেফাজতে রেখেছি। আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তারা সরকারবিরোধী কোনো সভায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। যদিও বিষয়টি এখনো রহস্যজনক পুরোপুরি জানা সম্ভব হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে সঠিক তথ্য জানার পর বিস্তারিত বলতে পারব।
স্থানীয় সচেতন মহল ও ছাত্র প্রতিনিধিরা বলছেন, এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র। ঢাকায় সমাবেশ করতে কোটি কোটি টাকা ইনভেস্ট করা হচ্ছে। আগামী কয়েক দিনে ঢাকায় আন্দোলন করে অস্থিরতা করার বড় পরিকল্পনা রয়েছে বলিও মনে করছেন তারা। এদিকে ঢাকা রায়পুর সড়কে চলাচলকারী ঢাকা এক্সপ্রেস ভাড়া করে একইভাবে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে বিভিন্ন পেশার শ্রমিক। তাদেরকেও পথিমধ্যে ছাত্র-জনতা আটকে দিয়েছে।