চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে জেলা গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নূর। ছবি: সংগৃহীত
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও দুই বছর দেখার আহ্বান জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেছেন, রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমরা ৫৩ বছর দেখেছি। কাজেই আমরা অন্তত আরও দুয়েক বছর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখি কী করে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকালে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে জেলা গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সংস্কার ব্যতীত কোনো নির্বাচন হতে পারে না মন্তব্য করে নুরুল হক নূর বলেন, নির্বাচন নিয়ে, ক্ষমতায় যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে অস্থির না হতে অনুরোধ করব। ৫৩ বছরের রাষ্ট্র ব্যবস্থা ‘ব্যর্থ এবং অকার্যকর’ হয়েছে বিধায় এই জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য জীবন দিয়েছে।
আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন’ এই অবস্থানের কথা তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক এই ভিপি বলেন, শুধু একটি নির্বাচনের জন্য কিংবা কাউকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য ছাত্র-জনতা জীবন দেয়নি। সংস্কার ব্যতীত কোনো নির্বাচন হতে পারে না। রাতারাতি নির্বাচন হলে ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে না।
কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব বা দলের ডাকে ছাত্র-জনতা এই গণ অভ্যুত্থানে অংশ নেয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ছাত্ররা ডাক দিয়েছিল কোটা সংস্কারের দাবিতে, ছাত্রদের সেই দাবির সঙ্গে যারা সংহতি জ্ঞাপন করেছিল, তাদের ওপর ক্রমাগত অত্যাচার-নির্যাতন, হামলা, গুলি, হত্যাযজ্ঞ সেগুলোর কারণে মানুষকে রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য করেছিল।
আন্তর্জাতিক পরিচিতি কাজে লাগিয়ে দেশের ‘ভঙ্গুর’ অর্থনীতিকে ইউনূস দ্রুত সময়ের মধ্যে টেনে তুলতে পারবেন, তবে সরকারকে ক্ষমতায় থাকার প্রশ্নে ‘ব্ল্যাংক চেক’ দেবেন না জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতা বলেন, আপনারা ভালো কাজ করবেন আমাদের সমর্থন পাবেন, গণবিরোধী কর্মকাণ্ড করলে, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে এক সেকেন্ডও সময় নেব না আপনাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে।
বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে স্বাগত বলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস একটি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারের প্রতিক্রিয়ায় নুর বলেন, আপনারা বলেছেন, দুয়েকটি রাজনৈতিক দল চায় আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনের অংশগ্রহণ করুক। ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর পা দিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসবে আর আমরা কি আঙুল চুষব?
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রত্যেকটি পাড়া মহল্লায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নাম যারাই মুখে নিবে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। সোজা কথা ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ সুযোগ দিলে ‘প্রতিরোধ’ গড়ে তোলা হবে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রয়োজনে ঢাকায় মহাসমাবেশ করবের জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দিব না। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধনের সময় সংগঠনের বিচারের বিধান না রাখায় সমালোচনাও করেন গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা।