অপলক দৃষ্টি
বহুদিন পর অপলক দৃষ্টি গেল
তোমার ঠোঁটে মুখে চিবুক গ্রীবায়
সমস্ত ঘর্মাক্ত কোষেই প্রকম্প এলো
সম্মোহনী রোমকূপে অষ্টম মাত্রায়।
আমি মুগ্ধতায় সেই শরৎ সায়াহ্নে
দাঁড়িয়ে খুঁজে ফিরি মেঘনার দু’কূল
তুমি শরমে মরমে জমাট লাবণ্যে
বৃষ্টিতে ভিজে যেন লজ্জায় জুথি ফুল।
তখনো নক্ষত্র মেলেনি স্মৃতির আঁখি
তারাদের খসে পড়া সাগর সৈকতে
কফির উষ্ণতাও কৃষ্ণগহ্বরমুখী
মেঘে মেঘে জমেও ফেরেনি কোনমতে।
হঠাৎ স্বচ্ছ কাচের সমতল ফ্রেমে
বুকের জমিনে জড়ালে সুরভী হেমে।
স্বপ্নবাজ আমি
অসাধারণ এক স্বপ্নবাজ এই আমি
পৌষের আড়মোড়া সেই সকাল থেকে
সন্ধ্যার সোনালি আভাও যখন ফিঁকে
তখনও তোমার স্বপ্নে বিভোর থাকি।
রাত্রি গভীরেও স্বপ্নগুলো একে একে
আমার অস্থিমজ্জা শিরা উপশিরায়
উঁকি দেয় রক্তের লোহিত কণিকায়
হঠাৎ গুমড়ে জেগে উঠি থেকে থেকে।
অদূরে অস্পষ্ট গোঙানির আওয়াজ
বুনো শুকরের দল সহসা উল্লাসে
নিমিশে গলাধিকরণ করে গোগ্রাসে
আমার স্বপ্নের অবিনাসি কারুকাজ।
তবু বিমূর্ত দৃষ্টে অসহায় জীবাত্মা
সকরুণ স্বপ্নবাজে গড়ে তুলি সত্তা।
আজন্ম নির্বাসন
কেউ আসে না এই হৃদয়ের কুটিরে
ধুসর ধুলোই জমাট বাঁধা মলাটে
ঘর্মাক্ত রোমকূপের বিরান তল্লাটে
সহসাই অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ঝরে শিশিরে।
এখানে নক্ষত্রদের নির্মম পতন
কালের স্রোতে হারিয়ে যাওয়া নিয়তি
সুর তোলে বেদনার করুণ আরতি
ঘটে নাই কখনো যা মনের মতন।
এখানেই আছে সহস্রের ছিন্ন কান্না রাশি
নিমিষে ভেসে আসে গুমোট ব্যথা
রূপকথার সুয়োরানির নির্মম গাঁথা
বাতাসে বেজে ওঠে ইস্রাফিলের বাঁশি।
কাল মহাকালের স্মৃতি ভুলেছি ভূষণ
এখানেই আমার আজন্ম নির্বাসন।