জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে সেনাবাহিনীর হাতে দিতে মন্ত্রণালয়ের কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বেলা দেড়টায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় এতো সহজে সমাধানযোগ্য যে, আন্দোলন করার দরকার ছিল না। কেরানীগঞ্জে একটা নতুন ক্যাম্পাসের অনুমোদন একনেকে নেয়া হয়েছে, যা তারা জানে না। সেখানে হল থেকে শুরু করে সব থাকবে। এটা ঘিরে মহাপরিকল্পনা আছে, এটাকে অন্তর্বর্তীসরকারের মেগা প্রকল্পই বলা চলে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা দাবি করেছে প্রকল্পটি কেন এতো বছর ধরে এভাবে আছে। এজন্য তারা চাই প্রকল্প পরিচালককে অপসারণ করে নতুন কাউকে দায়িত্ব দিতে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে ইউসিজি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
ওয়াহিদ উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরা এমন কিছু ছোট ছোট দাবি করেছে যা চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে সমাধান করা সম্ভব। আমাদের পর্যন্ত আসতে হয় না। তারা বলেছে প্রকল্পে যারা দুর্নীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। এটাতো বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে একটি হোয়াট পেপার করে করতে পারে সহজে।
ওয়াহিদ উদ্দিন আরও বলেন, চলমান প্রকল্পগুলোর কার্যক্রমও থেমে নেই, কাজ চলবে। শিক্ষার্থীরা অনেক জায়গায় দুর্নীতি হয়েছে বলে জানিয়েছে, তা তদন্ত করা হবে বলেছি। শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পের বাস্তবায়ন চাইছে, তাও ভাবা হবে ও মন্ত্রণালয় সহায়তা করবে।
এর আগে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তরসহ পাঁচ দফা দাবিতে সোমবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন জবি শিক্ষার্থীরা। এসময় সচিবালয়ের সামনের সড়ক অবরোধও করেন বিক্ষুব্ধরা। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মঙ্গলবার আলোচনায় বসার সিদ্ধান্তে দিলে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
তাদের দাবিগুলো হলো- স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টর কে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে; শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা সহ ঘোষণা করতে হবে যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হয়েছে ;অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে; সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষণাকৃত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে;বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ (পাঁচশত) কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।
পরে বিকেলে শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম ও তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে দাবি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করেন জবি শিক্ষার্থীদের ১২ জনের একটি প্রতিনিধি দল। এসময় প্রক্টরসহ ৫ জন শিক্ষকও উপস্থিত ছিলেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ আজ সভার আয়োজনের কথা বলা হয়।