প্রকাশ: সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭:৫৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
গত ৭ নভেম্বর ৫০ জনের একটি পর্যটক দল এমভি উৎসব নামের একটি জাহাজে করে সুন্দরবন ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যায়। রাত আনুমানিক ১১টায় সুন্দরবন এর সংরক্ষিত অঞ্চল কটকায় পৌঁছাতেই একজন যাত্রী গুরুতর অসুস্থ হয় যার বয়স মাত্র ছয় মাস।
কটকা থেকে মংলা অথবা খুলনার দূরত্ব আনুমানিক ৮৬ কিলোমিটার, যা প্রায় নয় ঘন্টার দূরত্বে অবস্থিত। তাছাড়া পর্যটন জাহাজগুলোর চলাচলের গতি নিতান্তই সীমিত। কাছাকাছি দূরত্বে জনবসতির চিহ্ন মাত্র নেই, জাহাজের মধ্যে কোনো ডাক্তার নেই, টেলিযোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন টেলিটকের একটি মাত্র ফোন।
ওই জাহাজে উপস্থিত ছিলেন সামরিক বাহিনীর একজন অবঃপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি বিষয়টি অবলোকন করেন এবং সাথে সাথে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরকে অবহিত করেন। অতঃপর কোস্ট গার্ড সদর দপ্তর এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহনের নিমিত্তে তাৎক্ষনিকভাবে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনকে নির্দেশনা প্রদান করে।
বিষয়টি জানা মাত্রই কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের সার্জন লে. মোহাম্মদ রায়হানুল জান্নাহ’র নেতৃত্বে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিক্যাল টিম অনতিবিলম্বে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সহ হাই স্পীড বোট যোগে কটকার উদ্দেশ্যে যায়।
উল্লেখ্য, রাত্রিকালীন অবস্থায় প্রচন্ড কুয়াশা থাকা সত্বেও উক্ত উদ্ধারকারী দলটি ৮৬ কিলোমিটার নদী পথ পাড়ি দিয়ে সুন্দরবনের দূর্গমতম স্থানে অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে পর্যটক জাহাজ এম ভি উৎসব এর নিকট পৌঁছায়। পরবর্তীতে সার্জন লে. মোহাম্মদ রায়হানুল জান্নাহ, এএমসি টুরিস্ট জাহাজটিতে গমন পূর্বক অসুস্থ শিশুটিকে জরুরী প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মেডিক্যাল ইভ্যাকুয়েশন সম্পন্ন পূর্বক বোট যোগে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে মোংলা বেইস এ স্থানান্তর করে। অতঃপর বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সযোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনায় বিশেষায়িত হাসপাতালে প্রেরণ করে শিশুটির সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়। যার ফলে উক্ত ভ্রমণকারী জাহাজে অবস্থানরত পর্যটক এবং জাহাজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। উল্লেখ্য যে, ট্যুরিস্ট সিজনে সাধারনত এধরনের জাহাজগুলি সমুদ্রের কাছাকাছি সুন্দরবনের গহীন এলাকায় গমন করে থাকে। উক্ত এলাকাসমূহে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্গম এবং জরুরী চিকিৎসা সেবা দেওয়া অত্যন্ত দুরুহ বিষয়। একারণে ট্যুরিস্ট জাহাজগুলি ভ্রমণের পূর্বে একজন চিকিৎসক/প্যারামেডিকসহ যাত্রা করলে এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা এড়ানো সম্ভব বলে প্রতীয়মান।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড উপকূল অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি মানবতার সেবায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। উল্লেখিত ঘটনাটি তারই অন্যতম উদাহরণ। জনগণের সেবায় কোস্ট গার্ড সর্বদা নিয়োজিত ছিল এবং ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে জানায় কোস্টগার্ড।