গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি তুলে আজ রোববার (১০ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। স্বৈরাচারের এই কর্মসূচি প্রতিহত করতে একইস্থানে গণজমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শুধু তাই নয়, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও আওয়ামী লীগকে কর্মসূচি পালন করতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এমন অবস্থায় নগরবাসীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ।
এর আগে গতকাল শনিবার (৯ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে রোববার গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টের নূর হোসেন চত্বরে নেতাকর্মীদের জড়ো হওয়ার আহ্বান জানায়। পোস্টে আরও বলা হয়, শহীদ নূর হোসেনের স্মরণে ও ‘অগণতান্ত্রিক শক্তির অপসারণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার’ দাবিতে রোববার বিকেল ৩টায় গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে।
আওয়ামী লীগের এমন ঘোষণার পর একই স্থানে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটি তাদের ফেসবুক পেজে জানায়, ‘পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে’ রোববার দুপুর ১২টায় জিরো পয়েন্টে গণজমায়েত করবে তারা। যদিও শনিবার রাতেই জিরো পয়েন্টে সমাবেত হতে শুরু করে ছাত্র-জনতা। আওয়ামী লীগের কার্যালয়ও পাহারা দিচ্ছেন তারা।
এদিকে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের জমায়েত হওয়ার ডাককে কেন্দ্র করে জিরো পয়েন্টে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ডিএমপি। বৃদ্ধি করা হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।
আওয়ামী লীগকে বিক্ষোভ মিছিল করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি তার ফেসবুকে লিখেছেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল। বাংলাদেশে প্রতিবাদ করার মতো দলটির কোনো সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশে কেউ সভা, সমাবেশ ও মিছিলের চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও তার ফেসবুকে লিখেছেন, গণহত্যাকারী ও নিষিদ্ধ সংগঠনের কেউ কর্মসূচি করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন সমাবেশ করার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। নগরীর শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য ডিএমপি বদ্ধপরিকর।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো সমাবেশ করার জন্য ডিএমপি থেকে অনুমতি নিতে হয়। অনুমতি ছাড়া কেউ সমাবেশ করার চেষ্টা করলে কঠোর হস্তে দমন করব। ঢাকা শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেন, কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের পর্যাপ্ত ফোর্স থাকবে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ। তাদের রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না।
ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। কোনো রকম নাশকতা বরদাশত করা হবে না। শান্তিপূর্ণ এলাকা থাকবে পুরো ঢাকা শহর।