ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি হুঁশিয়ারি করে বলেছেন, গাজা ও লেবাননে চলমান যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের সীমানা ছাড়িয়ে আরো বিস্তৃত হতে পারে। ওই দুই অঞ্চলে তেহরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ইসরায়েল লড়াই করছে।
শনিবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে আরাগচি বলেন, ‘যদি যুদ্ধের পরিধি আরো বাড়ে, এর ক্ষতিকর প্রভাব শুধু পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকবে না; নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিতিশীলতা ভিন্ন অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমনকি দূরের দেশেও।’
ইরানের শত্রু ইসরায়েল বর্তমানে গাজা উপত্যকায় তেহরান সমর্থিত ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড যুদ্ধ চালাচ্ছে, যা ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে শুরু হয়েছিল।
সম্প্রতি ইসরায়েলের মনোযোগ লেবাননে স্থানান্তরিত হয়েছে। সেখানে সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েল দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যাপক লড়াই করছে। গোষ্ঠীটিকে আর্থিক ও সামরিকভাবে ইরান সমর্থন করে।
এ ছাড়া ২৬ অক্টোবর ইসরায়েল ইরানে সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যা ছিল তেহরানের ১ অক্টোবরের হামলার প্রতিশোধ।
ইরান সমর্থিত নেতাদের ও রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনীর এক জেনারেলের হত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইরান সেই হামলা চালিয়েছিল। ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২৬ অক্টোবরের ইসরায়েলি হামলায় তাদের চার সেনা নিহত এবং কিছু রাডার সিস্টেমে ‘সীমিত ক্ষতি’ হয়েছে। পাশাপাশি একজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে বলে ইরানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল অবশ্য তাদের সতর্ক করেছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, গাজা ও লেবাননে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি ইরানের প্রতিক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি বলেন, ‘যদি তারা (ইসরায়েলিরা)…যুদ্ধবিরতি গ্রহণ করে এবং অঞ্চলটির নির্যাতিত ও নিরীহ মানুষদের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করে, তাহলে আমাদের প্রতিক্রিয়ার তীব্রতা বা ধরনের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।’
এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির একজন উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রতি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার বিপক্ষে সতর্ক করেন। উপদেষ্টা আলী লারিজানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ‘ইসরায়েল সংঘাত ইরানে নিয়ে যেতে চায়।
আমাদের বুঝে-শুনে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আবেগপ্রবণ প্রতিক্রিয়া দেখানো যাবে না।’ সূত্র : এএফপি