সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবর মাসে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতি উভয়ই বেড়েছে। অক্টোবর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়েছে। সেপ্টেম্বরে এ হার ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ।
অন্যদিকে সেপ্টেম্বরের এক অঙ্কের তুলনায় গত মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি বেড়ে দুই অঙ্কে দাঁড়িয়েছে। অক্টোবরে সাধারণ মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
সেপ্টেম্বরের সাড়ে ৯ শতাংশ থেকে কিছুটা কমে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি অক্টোবরে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
জানা গেছে, গত তিন মাসের মধ্যে পর্যন্ত অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ছিল সর্বোচ্চ। এর আগে, সেপ্টেম্বরে সামগ্রিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ ও আগস্টে ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
বিবিএস বলছে, অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। অক্টোবরে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এক মাস আগে ছিল ৯ দশমিক ৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ প্রায় দুই বছর ধরে ক্রমবর্ধমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি নয় শতাংশের ওপরে আছে। যার প্রভাব পড়েছে দেশের নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের ওপর।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিস (বিআইডিএস)-এর সাবেক গবেষণা পরিচালক ড. জায়েদ বখত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চাহিদা ও সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে মূল্যস্ফীতি বাড়ে-কমে। িসরকার চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে। কিন্ত সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পারছে না। এ কারণে মূল্যস্ফীতি আবারও বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিতে সরবরাহ বাড়াতে হলে শুল্ক কমিয়ে আমদানি বাড়াতে হবে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরবাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে।’
এর আগে আগস্টে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে কমার পর অক্টোবরে আবারও বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। আর গত জুলাইয়ে দেশে জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ওই মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ হারে।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে জুলাই মাসেই দানা বাঁধে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সে সময় আওয়ামী লীগের সরকার ব্যাপক দমনপীড়ন চালায় দেশব্যাপী। পরে এ আন্দোলন পরিণত হয় ছাত্র-জনতার সংগ্রামে, বিক্ষোভকারীরা সরকার পতনের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। যার ধারাবাহিকতায় সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটে।
শেখ হাসিনার সরকারের আমলে মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যানে কারসাজি করা হতো বলে প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। জনগণের সামনে অসাধারণ অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স তুলে ধরে সরকারের ভাবমূর্তি বাড়াতেই এসব করা হতো বলে জানিয়েছে কমিটি।