বিগত বছরগুলোতে আমেরিকার ‘বন্ধু’ হয়ে উঠেছিল ভারত। তবে শেষ চার বছরে ভারত-আমেরিকার মধ্যে কিছুটা ‘দূরত্ব’ তৈরি হয়েছে কিছু ক্ষেত্রে। সেক্ষেত্রে খলিস্তানি ইস্যু, ইউক্রেন যুদ্ধ, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা ইত্যাদি বিষয় রয়েছে।
আর তাই মার্কিন নির্বাচনের দিকে এখন নজর গোটা বিশ্বের। ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতবেন, নাকি কমলা হ্যারিস জিতবেন, এই নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।
পাশাপাশি ট্রাম্প বা কমলা জিতলে পরিস্থিতি কেমন হবে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। কারণ এই দুই প্রার্থীর এক একজনের নীতি এক একরকম।
অভিভাসন নীতিতে যেমন ট্রাম্প 'কট্টরপন্থী'। কমলা নিজে ভারতীয় ও আফ্রিকান বংশোদ্ভূত। তাই এই ইস্যুতে তিনি 'উদারপন্থী'।
এদিকে ট্রাম্পের সমর্থকরাও 'কট্টরপন্থী'। গতবার নির্বাচনের ফলাফলই মানেননি তারা। এই সব মিলিয়ে নির্বাচনের ফল ফের আমেরিকায় 'ঝড়' তুলবে কি না, তা ভাবচ্ছে অনেককেই। অপরদিকে এই নির্বাচনের ফলাফল ভারতের ওপর কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে জল্পনা কয়েক কোটি ভারতীয়রও।
ভারতের লাভ
বিগত বছরগুলিতে আমেরিকার 'বন্ধু' হয়ে উঠেছিল ভারত। তবে এই শেষ চার বছরে ভারত-আমেরিকার মধ্যে কিছুটা 'দূরত্ব' তৈরি হয়েছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে। সেক্ষেত্রে খলিস্তানি ইস্যু, ইউক্রেন যুদ্ধ, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা ইত্যাদি নানা বিষয় রয়েছে।
এর আগে রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়েও দিল্লির ওপর ওয়াশিংটনের চাপ সৃষ্টির চেষ্টা দেখা গিয়েছিল। আবার খলিস্তানি নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের হত্যার পরিকল্পনায় প্রাক্তন ভারতীয় সরকারি এজেন্টকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে সেদেশের বিচার বিভাগ। আবার খলিস্তানি নেতা নিজ্জরের খুনের ঘটনায় কানাডার 'পাশে' দাঁড়িয়েছে আমেরিকা।
এমতাবস্থায় সাম্প্রতিক সময়ে ডেমোক্র্যাট সরকারের সঙ্গে ভারতের মোদী সরকারের অনেক ক্ষেত্রেই কিছুটা হলেও 'দূরত্ব' দেখা গিয়েছে। তবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস যদি জেতেন, তাহরে ভারত-আমেরিকা সমীকরণ কোন দিকে এগোবে, তা নিয়ে কিছুটা জল্পনা থাকবে। তবে বর্তমান ডেমোক্র্যাট নীতিতে ভারত যে বাড়তি সুবিধা পাবে না, তা মনে করছেন অনেক বিশ্লেষকই।
এদিকে এর আগে ট্রাম্পের শাসনামলে ভারতের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক বেশ 'মধুর' ছিল বলে অনেকেই মনে করেন। সেটা অবশ্য ট্রাম্প-মোদী ব্যক্তিগত রসায়ানের ফলেও হয়ে থাকতে পারে।
২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে টেক্সাসের হিউস্টনে এক সভায় 'অব কি বার ট্রাম্প সরকার' স্লোগান দিয়েছিলেন মোদী। এদিকে ২০২০ সালে ভারত সফরে এসে মোদী স্টেডিয়ামে ভাষণ রেখেছিলেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ক্ষমতায় এলে ভারতীয় পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক বাড়াবেন। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত।
যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভোটারের সংখ্যা ৫০ লাখের কিছু বেশি। এদের মধ্যে আবার অধিকাংশই ঐতিহাসিকভাবে ডেমোক্র্যাট সমর্থক।
এদিকে ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাই তাদের সমর্থন আরও বেশি করে হ্যারিসের দিকে ঝুঁকবে বলে আশা করছে ডেমোক্র্যাট শিবির।
আর ভারতীয়দের জন্যে এইচ-১বি ভিসা একটি বড় ইস্যু। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কোন পথে হাঁটবেন তা ভাবাচ্ছে ভারতীয়দের। তাই গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভারতরও নজর আমেরিকার দিকে। তবে কোন প্রার্থী জিতলে ভারতের বেশি লাভ, তার উত্তর হয়ত সময়ই দেবে।