চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।
রোববার (৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ তাকে শপথ পড়ান।
সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ডা. শাহাদাত হোসেনের একান্ত সচিব মারুফুল হক চৌধুরী জানান, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে দলের শীর্ষ নেতা, মেয়রের আত্মীয়-স্বজনসহ ২৭ জন অতিথি যোগ দেন।
শপথগ্রহণ শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতে যাওয়ার কথা রয়েছে নতুন মেয়রের। এসময় মেয়রের সঙ্গে চট্টগ্রাম থেকে আসা নেতাকর্মীরাও থাকবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
গত ১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে রায় দেন আদালত।
রায় ঘোষণার সাতদিন পর ৮ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। তবে মেয়র হিসেবে পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পাবেন না শাহাদাত হোসেন। তিনি সর্বোচ্চ ১৪ মাস দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম ৩ লাখ ৬৯ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা করেন শাহাদাত। তার অভিযোগ, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চসিক নির্বাচনের ফলাফলে ইসি কর্মকর্তারা 'কারচুপি' করেছিলেন। মামলায় তিনি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানান।
মামলার এজাহারে শাহাদাত আরও অভিযোগ করেন, তিনটি ভোটকেন্দ্রে তার শূন্য ভোট দেখানো হলেও তিনদিন পর ২৮টি কেন্দ্রে তার শূন্য ভোট দেখানো হয়-যা অবিশ্বাস্য ও অকল্পনীয়।
মামলায় ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচনের ফল কারচুপির অভিযোগে তৎকালীন সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গত ১ অক্টোবর চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাইরুল আমিন ডা. শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরীর মেয়র নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করেন। পাশাপাশি ১০ দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবকে নির্দেশ দেন। আদালতের রায়ের ৮ দিন পর ৮ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন সচিব এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।