চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশের ওপর কর্তৃত্ব করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে।
ট্রিস্টান স্টাবস ১০৬ রানে আউট হলেও যে টনি ডি জর্জিকে মাহিদুল ৬ রানে জীবন দিয়েছেন তার সেঞ্চুরিতে ভর করে প্রোটিয়ারা বড় সংগ্রহের দিকে ছুটছে। আলোর স্বল্পতায় আগেভাগে খেলা শেষ হওয়ার আগে সফরকারীদের সংগ্রহ ছিল প্রথম ইনিংসে ২ উইকেটে ৩০৭ রান।
মাঠে গড়িয়েছে ৮১ ওভার। প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া ডি জর্জি ১৪১ রানে অপরাজিত আছেন। সঙ্গে ১৮ রানে অপরাজিত ডেভিড বেডিংহ্যাম।
দ্বিতীয় টেস্টে বড় সংগ্রহের পথে এগোচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম দিনে বাংলাদেশ মাত্র দুটি উইকেট ফেলতে পেরেছে। ২ উইকেটে ৩০৭ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে প্রোটিয়ারা।
ব্যাটিং সহায়ক পিচে বেশ বিপাকেই আছেন বাংলাদেশের বোলাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট ফেলতে রীতিমত ঘাম ঝরছে তাদের।
দলীয় ৬৯ রানে প্রথম উইকেট পড়েছিল। দ্বিতীয় উইকেটের জন্য অপেক্ষা করতে হলো ২৭০ রান পর্যন্ত। ২০১ রানের বিশাল জুটি গড়লেন টনি ডি জর্জি আর ত্রিস্তান স্টাবস।
স্টাবস তার টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। সেঞ্চুরি করে অবশেষে ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছে তার। তাইজুল ইসলাম তাকে বোল্ড করেছেন। ১৯৮ বলে গড়া স্টাবসের ১০৬ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি চার আর ৩টি ছক্কার মার।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনে কোনো সফলতা পায়নি বাংলাদেশ। এই সেশনে একটি উইকেটও শিকার করতে পারেনি স্বাগতিক দলের বোলাররা। ডি জর্জির সেঞ্চুরিতে ১ উইকেটে ২০৫ রান করে চা বিরতিতে যায় প্রোটিয়ারা।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এইডেন মার্করাম।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম উইকেট নিতে ১৮তম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বাংলাদেশকে। সফরকারীদের দলীয় ৬৯ রানের মাথায় বহুল প্রতিক্ষিত উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন তাইজুল ইসলাম।
১৮তম ওভারের প্রথম বলে তাইজুলকে উড়িয়ে মারতে গিয়েছিলেন এইডেন মার্করাম। কিন্তু প্রোটিয়া ওপেনার ধরে পড়েন মুমিনুল হকের হাতে। ৫৫ বলে ৩৩ রান করে সাজঘরে ফেরত যান মার্করাম।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে স্টাবসকে নিয়ে বড় জুটি ডি জর্জির। স্টাবস ফিরলেও জর্জিকে হার মানাতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৪১ রানে অপরাজিত আছেন তিনি। সঙ্গে ১৮ রান নিয়ে ব্যাট করছেন ডেভিড বেডিংহ্যাম।
একাদশে যারা
দক্ষিণ আফ্রিকা দুটি পরিবর্তন এনেছে। দলে ঢুকেছেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার সেনুরান মুথুসামী ও পেসার ডেন প্যাটারসন। মুধুসামি আবার বামহাতি স্পিনার। বাদ পড়েছেন ব্রিটজকে ও অফস্পিনার ডেন পিয়েট। তাতে প্রথম টেস্টের চেয়ে একজন পেসার বেড়েছে প্রোটিয়াদের।
বাংলাদেশ দলে অবশ্য পরিবর্তন তিনটি। অসুস্থতার কারণে খেলা হচ্ছে না লিটন দাসের। জাকের আলীও নেই। বাদ পড়েছেন নাঈম হাসান। ফলে দলে ঢুকেছেন পেসার নাহিদ রানা, কিপার ব্যাটার মাহিদুল ইসলাম ও ব্যাটার জাকির হাসান। উইকেট কিপার ব্যাটার মাহিদুলের অভিষেক হচ্ছে। প্রথম টেস্টে এক পেসার নিয়ে খেললেও শেষ টেস্টে দুই পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ একাদশ: সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, জাকির হাসান, মাহিদুল ইসলাম (উইকেটরক্ষক), মেহেদী হাসান মিরাজ, নাহিদ রানা, তাইজুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ।
দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: এইডেন মারক্রাম (অধিনায়ক), টনি ডি জর্জি, ট্রিস্টান স্টাবস, ডেভিড বেডিংহ্যাম, রায়ান রিকেলটন, কাইল ভেরেইন (উইকেটরক্ষক), সেনুরান মুথুসামী, ভিয়ান মুল্ডার, কেশভ মহারাজ, কাগিসো রাবাদা ও ডেন পিটারসন।
স্কোর (প্রথম দিন শেষে): প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা ৮১ ওভারে ৩০৭/২ (বেডিংহ্যাম ১৮*, ডি জর্জি ১৪১*; মারক্রাম ৩৩, স্টাবস ১০৬)