প্রকাশ: শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪, ১১:৩৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় দীপাবলি ও কালীপূজা উপলক্ষে প্রায় আড়াই শ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ির মেলা ঘিরে আলোচনা-সমালোচনার পর প্রাথমিকভাবে দুই দিনের মেলার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মেলার বিপক্ষের লোকজনসহ ইসলামী দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে প্রাথমিকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাল হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ও মেলার পক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে মেলার আয়োজন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন।
কালকিনি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ সন্ধ্যায় বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ডিসি স্যারের মিটিংয়ে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুই দিনের জন্য মেলা চলার অনুমতি স্যার দেবেন। তবে পৌরসভা থেকে যাঁকে ইজারা দেওয়া হয়েছে, সেটি বাতিলই থাকছে। যারা কালীপূজার আয়োজন করেছে, মেলাটি তারাই পরিচালনা করবে। রোববার জেলা প্রশাসন থেকে মেলাটি পরিচালনাসহ সার্বিক সব বিষয় লিখিত জানানো হবে।’
উপজেলা প্রশাসন, আয়োজক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দীপাবলি ও কালীপূজা। এই উৎসব ঘিরে কালকিনি উপজেলার ভূরঘাটা এলাকায় ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলার আয়োজন করা হয়। প্রায় ২৫০ বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এবার স্থানীয় ১২ জন ব্যক্তি ৯টি কারণ উপস্থাপন করে মেলাটি বন্ধের দাবি জানান। পরে কালকিনি পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন সভা করে গত বৃহস্পতিবার মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
সূত্রে জানা গেছে, গত ১ এপ্রিল পৌরসভার পক্ষ থেকে ৮০ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যে আকবর হোসেন সরদার নামের আওয়ামী লীগের এক নেতাকে মেলা আয়োজনের ইজারা দেওয়া হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে আওয়ামী লীগের নেতার ওই ইজারা বাতিলের দাবি জানায় একটি মহল। পরে সেটি করতে ব্যর্থ হলে তারা ৯টি কারণ দেখিয়ে মেলা পুরোপুরি বন্ধ করতে কালকিনি পৌরসভা ও প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানায়। পরে প্রশাসন অনেকটা চাপের মুখেই মেলাটি বন্ধের নির্দেশনা দেয়।
মেলা বন্ধের ঘোষণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়ে প্রশাসন। পরে মেলাটি চালুর ব্যাপারে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা-কর্মীরা জেলা প্রশাসক মোছা. ইয়াসমিন আক্তারের কাছে জানান। এরপর জেলা প্রশাসক নিজ কার্যালয়ে মেলার বিপক্ষের লোকজনসহ রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে জরুরি সভার আয়োজন করেন। সভায় কালীপূজার পাশাপাশি মেলাটি দুই দিনের জন্য পরিচালনা করার ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাল রোববার হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত নেওয়া হবে।
সভায় অংশ নেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি আজিজুল হক মল্লিক। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পূজা নিয়ে তাঁদের আপত্তি নেই। মেলা নিয়ে তাঁদের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের আপত্তি থাকায় তাঁরা অভিযোগ দেন। বিষয়টি তাঁরা জানতেন। মেলা নিয়ে জেলা প্রশাসক বিকেলে তাঁদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। সভায় তাঁরা মেলার বিপক্ষে ছিলেন। সভায় মন্দিরের লোকজন তিন দিনের পূজার কথা জানিয়েছেন। পূজার সঙ্গে মেলার সম্পর্ক নেই বলেও জানিয়েছেন। সবকিছু জেলা প্রশাসক নোট করেছেন। সব শুনে