নির্বাচন কমিশনসহ (ইসি) সব দপ্তর, সংস্থার সিনিয়র সচিব বা সচিবদের ২৫ দফা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ইসি সচিব শফিউল আজিমসহ অন্যদের সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের পাঠানো আধা সরকারি পত্র থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
নির্দেশনাগুলো হলো
১. ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত ‘মার্চিং অর্ডার’ অনুসরণ করতে হবে;
২. সৃষ্টিশীল, নাগরিক-বান্ধব মানসিকতা নিয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার পরিকল্পনা এবং একই সঙ্গে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে;
৩. সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণ করতে হবে;
৪. বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে সবাইকে স্ব স্ব ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে;
৫. নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য গৎবাঁধা চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে, চিন্তার সংস্কার করে, সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে;
৬. দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে, সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে;
৭. বাজেটের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে;
৮. সরকারি ক্রয়ে যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূর করতে হবে;
৯. বর্তমানে বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আগ্রহ, ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, দেশের স্বার্থে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগাতে হবে;
১০. নিজ কর্তব্যকর্মে দায়িত্ববোধ ও সংবেদনশীলতা বজায় রাখতে হবে;
১১. সেবা প্রার্থীদের কেউ যেন কোনোরূপ ভোগান্তি, হয়রানি কিংবা কোনো কারণে দীর্ঘসূত্রিতার শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে;
১২. আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে;
১৩. প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে;
১৪. জরুরি সরবরাহসমূহ নিশ্চিত করে তা অব্যাহত রাখতে হবে;
১৫. কৃষি উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে;
১৬. সরকারকে জনবান্ধব সরকারে পরিণত করতে সমবেতভাবে কাজ করতে হবে;
১৭. মানবসম্পদ উন্নয়নে যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম যাচাই করে প্রয়োজনে সংস্কার করতে হবে;
১৮. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে হবে;
১৯. বিদ্যুৎ উৎপাদন, সরবরাহ ও সঞ্চালন যাতে ব্যাহত না হয় সে বিষয়ে তৎপর থাকতে হবে;
২০. গ্যাসের দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে;
২১. খাদ্য সংগ্রহ, মজুত ও সরবরাহ সন্তোষজনক রাখতে হবে;
২২. আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমদানির বিকল্প উৎস বের করতে হবে;
২৩. ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়মিত তদারকি করতে হবে;
২৪. শিল্প উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে এবং
২৫. আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা ও সিদ্ধান্তসমূহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নে আপনার একান্ত সহযোগিতা ও উদ্যোগ কামনা করছি। নির্দেশনা অনুযায়ী প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আপনার মন্ত্রণালয়/বিভাগ হতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণপূর্বক সে সম্পর্কে অগ্রগতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে হিত রাখার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।