গাজীপুরের রানিগঞ্জ-চরসিন্দুর আঞ্চলিক সড়ক ভেঙে নদীতে পড়েছে। এতে নদী তীরবর্তী সনাতন ধর্মের অন্তত ৩০টি পরিবার হুমকিতে পড়েছে।
এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাজীপুর উপনবিভাগীয় প্রকৌশলী রায়হান খান বলেন, নদীর তীর ভেঙে গেছে। বাড়িঘর ভেঙে যাচ্ছে এমন ভিডিও পেয়েছি।
তিনি বলেন, নদীর তীরবর্তী এলাকার একাধিক স্থানে ভাঙন দেখা গেছে। এসব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এলাকাবাসীর আবেদন প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি প্রকল্প হাতে নিবে।
গত মঙ্গলবার সকাল ৯টায় কাপাসিয়ার রানীগঞ্জ চরসিন্দুর সড়কের শীতলক্ষ্যা নদীর ঘিঘাট এলাকায় গিয়ে এ ভাঙন দেখা গেছে।
ঘিঘাট সংঘ মিত্র পূজা মণ্ডপের সহ-সভাপতি পারুল রবীদাস বলেন, এ ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পূজা মণ্ডপসহ ৩০টি পরিবরের সব বাড়িঘর ভেঙে যাবে।
স্থানীয় নাসেরা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নীপা রানী দাস জানান, আমার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমার মতো এমন অনেকেই স্কুলে যেতে পারেনা। সড়ক বন্ধ স্কুলে যাব কিভাবে? বিকল্প পথ না থাকায় স্কুলে যেতে পারছি না।
তারাগঞ্জ নাসেরা গ্রামের মাসুদ আলম সরকার বলেন, এই জায়গাটা পুরোটা এখন ঝুঁকিপূর্ণ।
রানীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ পরাগ আহমেদ বলেন, নরসিংদী থেকে আমাদের মালামাল আনা নেওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। এই সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ব্যবসা স্থবির হয়ে গেছে।
তারাগঞ্জ গ্রামের মফিজা আক্তার বলেন, আমার স্বামী নাই। শুনছি, নদীভাঙন দেখা গেছে। তাই প্রতেবেশীসহ তিন চার জনকে নিয়ে দেখতে এসেছি। নদীভাঙনে আমাদের অনক অসুবিধা হবে। এছাড়া এই নদীর তীরে আমাদের ফসল। আবাদ করতে না পারলে খাব কিভাবে?
লাল মোহন রবিদাস ছেলে গনেশ রবিদাস বলেন, আমাদের বাড়িঘর সব নদীতে যাচ্ছে। পাড় ভেঙে প্রায় ৩০ ফুট নিচে নদীতে চলে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার লোকজন জানায়, এই নদী থেকে আগে অবৈধভাবে প্রচুর বালি উত্তোলন করে বিক্রি হতো। বছরের পর বছর এ বালি ব্যবসা হয়েছে। তাদের অবৈধ বালি ব্যবসার কারণে আজকে পাড়া মহল্লা ভেঙে যাচ্ছে।
কাপাসিয়া উপজেলার প্রকৌশল মাইন উদ্দিন বলেন, আমিও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বিএনপি কাপাসিয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাজীপুর জেলা উপ সহকারী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।