বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারত গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছেন তার চাচাতো ভাইয়েরা।
আত্মগোপনে থাকার প্রায় দুই মাস পর মুখ খুললেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই এবং বিসিবির পরিচালক শেখ সোহেল।
খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির নিয়ন্ত্রক শেখ সোহেল মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করেন।
সেখানে শেখ সোহেল বলেন, আপনারা জানেন আমার নামে একটি মামলা দেওয়া হয়েছে, চাঁদাবাজির। মামলার তারিখটি ছিল ২৩ এপ্রিল ২০২৪। এই মামলার বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও টিভিতে সম্প্রচার করা হয়েছে। মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। তার প্রমাণ হলো আমার বাংলাদেশি পাসপোর্ট।
ভিডিওতে দেখা যায়, পাসপোর্টের পৃষ্ঠা উল্টে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অস্ট্রেলিয়াতে শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের একটি প্রকল্প ছিল, ওইটার জন্য আমি অস্ট্রেলিয়ায় একটি মিটিংয়ে অ্যাটেন্ড করতে গিয়েছিলাম। আমি ঢাকা থেকে গিয়েছিলাম ২০ এপ্রিল এবং ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশে ফিরে আসি। এখানে (পাসপোর্টে) আসা ও যাওয়ার তথ্য দেওয়া আছে। এটা প্রমাণ করে যে আমি ২০ তারিখ থেকে ২৭ তারিখ বাংলাদেশে ছিলাম না। আমি যে এয়ারলাইন্স ব্যবহার করেছি, সেগুলোর সব কপি আপনাদের দেবো। সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াটভাবে আমার নামে অভিযোগ করা হয়েছে। এতে আপনারা বুঝতে পারেন এবং এতেই জানতে পারবেন আমাদের নামে যা কিছু বলা হচ্ছে সবকিছুই মিথ্যা এবং একটা নাটক।
পরে আরেক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘মিথ্যা তখনই জিতে যায়, যখন সত্য বলার মানুষগুলো বোবা হয়ে যায়- শেখ সোহেল’।
উল্লেখ্য, যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সোহেলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় এলজিইডি খুলনার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম মুহাম্মদ আনিছুজ্জামানকেও আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১– এ মামলাটি করেন শেখ শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী। মামলায় শেখ সোহেল ও আনিছুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৬০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৩ এপ্রিল দুপুরের দিকে কয়েকজন যুবক এসে খুলনা যুবলীগের নেতাকর্মী পরিচয় দিয়ে শহিদুল ইসলামকে শেখ বাড়িতে শেখ সোহেলের কাছে নিয়ে যান। সেখানে সোহেল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আনিছুজ্জামানের বিরুদ্ধে হওয়া দুদকের অভিযোগের জন্য ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামকে দায়ী করেন।
ওই অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য শহিদুল ইসলামের কাছে ৬০ লাখ টাকা দাবি করেন। সেদিন বিকেলের মধ্যে ব্যাংক ও বিভিন্ন জায়গা থেকে ধারদেনা করে ৬০ লাখ টাকা এনে সোহেলকে দেন শহিদুল। আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে শেখ সোহেল ওই টাকা গ্রহণ করেছেন।