গত ২৭ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলের বিমান হামলায় লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু হয়। এর তিনদিন পর ইসরায়েলে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। সে সময়ই গুঞ্জন উঠেছিল তেহরানে হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল।
তবে এতোদিন এ বিষয়ে প্রকাশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কথা বলেনি তেলআবিব। অবশেষে ইরানে পাল্টা হামলা চালানো ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল শনিবার (৫ অক্টোবর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, সম্প্রতি ইরান যে মাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, তা ইসরায়েল বরদাস্ত করবে না।
তিনি বলেন, নিজের ভূখণ্ড ও নাগরিকদের রক্ষা করা শুধু অধিকারই নয়, এটি ইসরায়েলের দায়িত্বও। ইসরায়েল সেই দায়িত্ব নিশ্চিতভাবেই পালন করবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের কোনো দেশই তাদের শহর ও নাগরিকদের ওপর এ ধরনের হামলা মেনে নেবে না, ইসরায়েলও মেনে নেবে না।
এদিকে, হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার দুদিন পরেই লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এরমধ্যেই নাসরুল্লাহর উত্তরসূরি হাশিম সাফিউদ্দিনকে লক্ষ্য গত ৩ অক্টোবর হামলা চালায় তেলআবিব। এরপর থেকে সাফিউদ্দিনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
হামলায় হাশেম সাফিউদ্দিন আহত বা নিহত হয়েছেন কি না, সে সম্পর্কে গণমাধ্যমগুলো কোনো তথ্য দেয়নি। হিজবুল্লাহও এখন পর্যন্ত সাফিউদ্দিন সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি।
জানা গেছে, হিজবুল্লাহর দুই নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে একজন সাফিউদ্দিন। তিনি নিহত হাসান নাসরুল্লাহর চাচাত ভাই। ধারণা করা হচ্ছে, নাসরুল্লাহর উত্তরসূরি হিসেবে হিজবুল্লাহর পরবর্তী প্রধানের দায়িত্ব পাবেন তিনি। সাফিউদ্দিন বর্তমানে হিজবুল্লাহর নির্বাহী পরিষদের প্রধান।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মিত্র হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলে নানা সময় ছোট আকারে হামলা চালিয়ে আসছিল হিজবুল্লাহ। বলা হয়, হিজবুল্লাহর প্রধান সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ ইরান।
চলতি বছরের মে মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান। যদিও অনেকের ধারণা এর পেছনে ইসরায়েলের হাত রয়েছে। রাইসির মৃত্যু এক মাস পরই (জুলাই) ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে ‘গুপ্ত হামলা’ চালিয়ে হত্যা করে ইসরায়েল। এরপর থেকেই ইসরায়েলে ধারাবাহিক হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ।