চুরি করতে এক নারীর বাড়িতে ঢুকেছিল চোর। পরে ওই নারী দেখেন, চোর তার কাপড় শুকিয়ে দিয়েছে, কেনাকাটা করে আনা জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখেছে। এমনকি স্টোভে রান্না করে খাবারও রেখে গেছে।
অদ্ভুত এই চুরির ঘটনা গত ১৬ জুলাইয়ের, যুক্তরাজ্যের মনমাউথশায়ারের। চোরের নাম ডেমিয়েন উজনিলোভিচ। খবর বিবিসির
গত বৃহস্পতিবার কার্ডিফ ক্রাউন কোর্ট ৩৬ বছর বয়সি রসিক চোর ডেমিয়েনকে ২২ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পর তিনি দেখেন, বাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে রাখা হয়েছে, রিসাইক্লিং বিন খালি করে রাখা।
চোর একটি চিরকুটও রেখে যায়। তাতে লেখা ছিল, ‘চিন্তা কোরো না, খুশি থাকো, খেয়ে নাও এবং আয়েশ করো।’
আদালতে জানানো হয়, পোষা পাখিকেও খাবার দেওয়ার পাশাপাশি গাছের টবের জায়গাও বদলে দিয়েছিল চোর।
বাড়ির ভেতরে জুতা প্যাকেট থেকে খুলে প্যাকেট বাইরে ফেলে রাখা হয়েছিল; চোর সেই পাকেট ময়লার বিনে নিয়ে রেখেছে।
প্রসিকিউটর অ্যালিস সাইকস জানান, ভুক্তভোগী নারীর রান্নাঘরের জিনিস ব্যবহার করে খাবারও রান্না করা হয়েছিল।
বাজারের ব্যাগ থেকে খাবার বের করে ফ্রিজে সাজিয়েও রেখেছে চোর। রান্নাঘরের বাসন-কোসন গুছিয়ে রেখেছে, ময়লা বাসনপত্র রিসাইকেল বিনে ফেলে দিয়েছে।
চোর এমনকি টুথব্রাশের মাথাও বদলে দিয়েছে, একটি খালি ওয়াইনের বোতল খালি করে র্যাকে রেখে দিয়েছে। এমনকি মেঝেও মুছে পরিষ্কার করে দিয়েছে।
ভুক্তভোগী দেখেন, একটি গ্লাসের পাশে এক বোতল রেড ওয়াইন আর একটি বোতল ওপেনার রাখা। আর লিভিং রুমের টেবিলে রাখা মিষ্টির বাটি।
ওই নারীর প্রতিবেশী তাকে জানান, তিনি একটা লোককে কাপড় শুকাতে দিতে দেখেছেন।
ডেমিয়েন উজনিলোভিচ আরেকটি বাড়িতেও এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। গত ২৯ জুলাই ওই বাড়ির মালিক তার ফোনে সিসিটিভি অ্যালার্ট পেয়ে দেখেন, উজনিলোভিচ তার ড্রাইভওয়েতে হাঁটছেন।
উজনিলোভিচ ওই সামারহাউসের শাওয়ার ব্যবহার করে গোসল করে তার কাপড় ধুয়ে নেন। ওই বাড়ির খাবার ও পানীয়ও খান তিনি।
ভুক্তভোগী তার জামাতাকে নিয়ে সামারহাউসে যান। সেখানে গিয়ে উজনিলোভিচকে অভিযুক্তকে মদ্যপ অবস্থায় দেখেন। তাকে চলে যেতে বলা হলে তিনি চলে যান। তবে পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে উজনিলোভিচের আইনজীবী তাবিথা ওয়াকার বলেন, তার মক্কেল ওই সময়ে গৃহহীন ছিলেন এবং নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং তাদের ক্ষতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
উজনিলোভিচের কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই। তিনি দুটি চুরির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন।