প্রায় পাঁচ বছর পর জুমার নামাজে ইমামতি করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। খুতবায় তিনি রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য। এসময় তেহরানে খামেনিকে দেখার জন্য ও তার বক্তব্য শোনার জন্য হাজারো মানুষ জমায়েত হয়।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) তেহরানের ইমাম খোমেনি গ্র্যান্ড মোসাল্লা মসজিদে জুমার নামাজে ইমামতি করেছেন এই ধর্মীয় নেতা।
এসময় ইসরায়েল রাষ্ট্র বেশিদিন টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এছাড়া, ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য ইরানের সেনাবাহিনীর অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন তিনি।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম প্রেস টিভি এ খবর জানিয়েছে।
খামেনি বলেছেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অসাধারণ এই পদক্ষেপ ছিল সম্পূর্ণ বৈধ ও ন্যায়সঙ্গত। আমেরিকার ‘পাগলা কুকুর’ ও নেকড়ের মতো হিংস্র ইহুদিবাদী এই শাসকগোষ্ঠীর ভয়াবহ সব অপরাধের জন্য আমাদের সেনারা তাদের সামান্য শাস্তিই দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘ইসলামিক রিপাবলিক তার দায়িত্ব শক্তি ও দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করবে। আমরা পদক্ষেপ নিতে তাড়াহুড়া বা সময়ক্ষেপণ, কোনোটিই করবো না।’
সর্বশেষ ২০২০ সালের জানুয়ারিতে, ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর জনসম্মুখে জুমার নামাজে ইমামতি করেছিলেন খামেনি। কুদস ফোর্সের কমান্ডার কাশেম সোলায়মানি এক হামলায় প্রাণ হারালে তার জবাবে ওই হামলা করেছিল তেহরান।
নামাজের পর হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরাল্লাহর স্মরণে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারান নাসরাল্লাহ।
নাসরাল্লাহকে ‘ভাই’ বলে অভিহিত করেছেন খামেনি। বক্তব্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেছেন, নাসরাল্লাহকে নিয়ে তিনি ‘গর্বিত’ এবং তিনি ছিলেন ‘ইসলামি বিশ্বের প্রিয় মুখ, এই অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্য) প্রাণবন্ত কণ্ঠস্বর, লেবাননের অলংকার।’
নাসরাল্লাহকে শ্রদ্ধা জানানোর প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভব করছিলেন বলে জানিয়েছেন আয়াতুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘প্রিয় সাইয়েদের (নাসরাল্লাহ) শাহাদাতবরণে আমরা সবাই শোকাহত। কিন্তু তার মানে এই নয়, আমরা বিষণ্ন, বিপর্যস্ত ও হতাশ হয়ে পড়েছি।’
নাসরাল্লাহ এই পৃথিবী ত্যাগ করলেও তার ‘ব্যক্তিত্ব, অনুপ্রেরণা থেকে যাবে’ বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন খামেনি।
প্রয়াত হিজবুল্লাহ প্রধানকে স্মরণ করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, ‘তিনি ছিলেন শোষক ও আগ্রাসী দানবদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক, শোষিতদের রক্ষক। যোদ্ধা ও অধিকার সচেতনদের জন্য তিনি ছিলেন সাহস ও অনুপ্রেরণার উৎস। তার জনপ্রিয়তা লেবানন, ইরান ও আরব বিশ্বের সীমানা অতিক্রম করেছিল। তার মৃত্যুতে এই প্রভাব আরও বৃদ্ধি পাবে।’