বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: ডক্টরেট ডিগ্রি পেলেন ক্রিকেটার মঈন আলী   বিক্ষোভরত অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া   জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান   রেলপথ মন্ত্রণালয়ে যুক্ত হলো ৫ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট   ছাত্র-জনতার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা   আইজিপি হিসেবে বাহারুল আলমের দায়িত্ব গ্রহণ   শেখ হাসিনা এখনও প্রধানমন্ত্রী- এ কথা বলেননি ট্রাম্প   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
সিলেট নগরীর রাস্তা ঘাটের বেহাল দশা!
সিলেট প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ৭:৪৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আওয়াতাদিন নগরীর অলি গলি রাস্তা গুলোর বেহাল দশা। অতি বৃষ্টি ও বন্যার পানি নগরীর বিভিন্ন গলিতে ঢুকে পড়ায় রাস্তাগুলোতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর ভেতর অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এ সকল সড়ক দিয়ে যানবাহন গুলোকে চলতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। খানাখন্দের মধ্য দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই অকেজো হয়ে যায় গাড়ি। প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনাও ঘটছে সড়ক গুলিতে। কয়েক দফার বন্যার কারণে এই অবস্থা হলেও দেখার যে কেউ নেই। চলতি বছরে সর্বশেষ বন্যার পর সিলেট নগরীর ভেতর একমাত্র পাঠানটুলার আরসিসি ঢালাইয়ের কিছু অংশ ছাড়া, অধিকাংশ সড়কজুড়ে খানাখন্দ। উঠে গেছে পিচঢালাই। কোথাও  কোথাও সড়কের অবস্থা এমন হয়েছে- দেখে মনে হয় ধান রোপণের জন্য গরু দিয়ে খেতের জমি প্রস্তুত করা হয়েছে। অনেক সড়কে একাধিক বড়-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলে এসকল গর্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

২০২২ সালের পর কয়েক  মাস আগে সর্বশেষ আরেক দফায় বন্যার দুর্গতিতে পড়ে সিলেট। তার পর সিটি কর্পোরেশনের  ভেতর অধিকাংশ সড়কের চেহারা পাল্টে যায়। তালতলা সড়কের অবস্থা একেবারে বেহাল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে তাল তলা পয়েন্ট  থেকে সুরমা মার্কেট পর্যন্ত সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন শত-শত সিএনজি চালিত অটোরিকশা এই সড়ক দিয়ে ওসমানী হাসপাতাল, মদিনামার্কেট, টুকেরবাজার যাতায়াত করে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে চলাচল করার সময় যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। তাই দ্রুত সংস্কারের দাবি সবার।

করুণ অবস্থা লামাবাজার পয়েন্ট থেকে জিতু মিয়ার পয়েন্ট পর্যন্ত সড়কের। বন্যার পূর্বে সড়কের অবস্থা কিছুটা ভালো থাকলে বন্যা পরবর্তী সময় থেকে ভোগান্তি চরমে পৌঁছে গেছে। নগরীর ভেতর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যে একটি কালিঘাট। পাইকারীবাজার হওয়ায় প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে মালামাল নিয়ে দূরপাল্লার অনেক ভারি যানবাহন চলাচল করে। যে কারণে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সড়কটি ব্যস্ত থাকে। সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে মজলিস হোটেলের সম্মুখ থেকে লালদিঘী হয়ে কালিঘাট পর্যন্ত সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। একবার এ সড়ক দিয়ে গেলে দ্বিতীয়বার আর যেতে ইচ্ছা হয় না। সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল খুব ধীরগতিতে চালাতে হয়। তবে গত দুদিন থেকে বৃষ্টি হবার পর সড়কটির আরো করুণ দশা। অধিকাংশ গর্তে পানি জমে থাকায় পায়ে চলাফেরা করাটাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সড়কের খারাপ অবস্থা ব্যবসার উপরও প্রভাব ফেলছে।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মেয়র থাকাকালীন সময় থেকে সড়কটির অবস্থা বেহাল হয়েছে। অথচ বার বার বলার পরও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এখনতো দেখারও কেউ নেই। কালিঘাটের পাইকারীবাজারের ব্যবসায়ী নোমান, শহীদ, বাবুল আহমদসহ একাধিক ব্যবসায়ী বলেছেন, প্রতিদিন অসংখ্য গাড়ি এই সড়ক দিয়ে চলাফেরা করে।

একই ভাবে সড়কের বেহাল দশা মিরাবাজার থেকে শিবগঞ্জ পর্যন্ত। আবার শিবগঞ্জ থেকে টিলাগড় পয়েন্ট পর্যন্ত  বেশ কিছু অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এমসি কলেজ, সরকারি কলেজসহ এই সড়ক মাড়িয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন এলাকাতেও  যেতে হয়। যে কারণে সড়কটি অনেক গুরুত্ব বহন করে।
মধুবন সুপার মার্কেট থেকে শিশুপার্ক পর্যন্ত বেশ কয়েক গজ সড়কের অবস্থাও নাজুক। দেখা গেছে অনেকগুলো গর্ত। এগুলোর অনেক জায়গা ইট দিয়ে জোড়াতালি দেওয়া হয়েছিল। সেগুলোও উঠে গেছে। এছাড়া আম্বরখানা থেকে ইলেকট্রিক সাপ্লাই হয়ে টিলাগড় পর্যন্ত অন্তত দুই কিলোমিটার সড়কের অবস্থা এবড়োথেবড়ো। খানাখন্দের জায়গা দিয়ে গাড়ি ধীরে-ধীরে চলাচল না করলে উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। অনেক সময় গাড়ি উল্টে গিয়ে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। সোবহানীঘা থেকে উপশহর  যেতেও অনেক গুলো গর্তের মুখে পড়তে হয়।

লালদিঘীরপাড়ে রিকশাচালক রহিম বলেন, একবার এ সড়ক দিয়ে গেলে দ্বিতীয়বার আর যেতে ইচ্ছা হয় না। সিএনজি অটোরিকশা চালক বেলাল মিয়া বলেন, দিনের বেলাতেও অটোরিকশা খুব ধীরগতিতে চালাতে হয়, না হয় উল্টে যায়।

এতো গেলো সিটি কর্পোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের চিত্র। প্রতিটি ওয়ার্ডের পাড়া-মহল্লর সড়কগুলোর অবস্থাও বেহাল। মাসের পর মাস মানুষ কষ্ট করছেন, দুর্ভোগে পড়ছেন।

নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের খারপাড়া এলাকার বাসিন্দা বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক জাবেদ আহমদ। কথা হলে তিনি বলেন, ‘খারপাড়ার প্রধান এবং দুটি সাবসড়ক বিগত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সময়ে প্রশস্তকরণ করা হয়।

কিন্তু একই ওয়ার্ডের মিতালী আবাসিক এলাকার ভেতরের আরজদ আলী মসজিদের পরের গলি প্রশস্তকরণ হয়নি। একেবারে অবহেলিত এই সড়কটি বর্তমানে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। যেখানে সেখানে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত।’

যোগাযোগ করা হলে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বর্তমান বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেছেন, ‘আমি নিজেও অসহায় সড়কগুলোর অবস্থা দেখে। কি করবো, বুঝে উঠতে পারছি না। তিনি বলেন, ২০২২ সালে বন্যার পর সিলেটের সড়কগুলোর টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকারের কাছে ৪৮৮ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা পেয়েছি ২ কোটি টাকা। তার মধ্যে বর্তমানে দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://dailyvorerpata.com/ad/af.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]