প্রকাশ: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ৭:৪৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সেনাবাহিনীর হাতে বার্ডস গ্রুপের চেয়ারম্যান আটক হয়েছে এমন খবরে সার্ভিস বেনেফিট ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে টানা ৫৩ ঘন্টা পর নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন কারখানাটির শ্রমিকরা। এরপরই শ্রমিকরা সড়ক থেকে সড়ে কারখানার প্রধান ফটকে গিয়ে অবস্থান নেন।
বুধবার দুপুর ১ টার দিকে মহাসড়ক থেকে সরে যায় শ্রমিকরা। এর আগে গত সোমবার সকাল নয়টার দিকে পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কটি অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শ্রমিকরা।
এই অবরোধের কারণে পার্শ্ববর্তী বাইপাইল আব্দুল্লাহপুর সড়ক ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও যানজট সৃষ্টি হয়েছিলো। সব মিলিয়ে ৩ সড়কে প্রায় ৩০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। যানজটের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছিল ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক।
শ্রমিকরা জানায়, আমরা টানা ৫৩ ঘন্টা ধরে সড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছি আমাদের পাওনা পরিশোধের জন্য। কিন্তু কোন পক্ষই আমাদের সাথে কথা বলেনি। আজ (বুধবার) প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয় বার্ডস গ্রুপের মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যানজটের কারণে তাকে কারখানায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। রাস্তা ফাঁকা করতে হবে। এমন খবরে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেছে শ্রমিকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) লে-অফ করা বার্ডস গ্রুপের শ্রমিকদের সার্ভিস বেনেফিট ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দিন ধার্য্য করা ছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ কোন ধরনের পাওনাদি পরিশোধ না করে শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এমনকি তিন মাস সময় চেয়ে কারখানার গেটে একটি নোটিশও সাঁটিয়ে দেন কারখানা কতৃপক্ষ। সকল শ্রমিক পাওনাদি পাওয়ার আশায় সকালে কারখানায় গেলে নোটিশে আরও তিনমাস সময় চাওয়ার বিষয়টি দেখতে পায় শ্রমিকরা। এসময় উত্তেজিত হয় সকল শ্রমিক নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বুড়িরবাজার রোড এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। অবরোধের টানা ৫৩ ঘন্টা পর মালিককে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে সড়ক ছেড়ে দেয় শ্রমিকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্ডস গ্রুপের এক শ্রমিক বলেন, আমাদের চুক্তির দিন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিশ্বাসযোগ্য লোকজন ছিলেন। কিন্তু সেই চুক্তিও ভঙ্গ করেছি মালিকপক্ষ। ফলে আমরা বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমাদের অনেক শ্রমিক চাকরি না পেয়ে গ্রামে চলে গিয়েছিলেন। তারা বকেয়া পাওনাদির জন্য গ্রাম থেকে এসেছেন।
এব্যাপারে শিল্পপুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম ও কারখানা কতৃপক্ষের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বার্ডস গ্রুপের মালিককে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে ১ টার দিকে সড়ক ছেড়ে দেয় আন্দোলনরত শ্রমিকরা। সড়কে যানচলাচল শুরু হয়েছে।
ঢাকা জেলা পুলিশের সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. শাহীনুর কবির বলেন, পুলিশ বিজিবি, র্যাব ও সেনাবাহিনীর চেষ্টায় সড়কটিতে যান চলাচল শুরু হয়। তবে এখনো সড়কটিতে যানবাহনের চাপ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ট্রাফিক পুলিশ কাজ শুরু করেছে।