সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনের ব্যক্তিগত স্টাফ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের সম্পদের হিসাব তদন্ত ও তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে অনুসন্ধান শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানায় সংস্থাটি। এতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন সুধা সদনের ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পায় জাহাঙ্গীর আলম। যার কাজ ছিল সুধা সদনে খাবার পানি সরবরাহ করা। এ কারণে তার নাম হয় পানি জাহাঙ্গীর।
পরবর্তীতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে সে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দেয়া শুরু করে। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী পরিচয় ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পদ, চাকরি নিয়োগ ও বদলী বাণিজ্য করেন জাহাঙ্গীর। বাগিয়েছেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ, গড়েছেন কোটি টকার অবৈধ সম্পদ।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে তিনি ৪০০ কোটি টাকার মালিকসহ গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন মর্মে জানা যায়। এছাড়া গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি নোয়াখালী-১ আসন (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা গেছে, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে রয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ। যার মধ্যে ধানমন্ডিতে ২৩৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, ১টি গাড়ি, বিভিন্ন ব্যবসায় মূলধন ৭৩ লাখটাকা এবং ব্যাংকে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
জাহাঙ্গীরের নিজের নামে তার এলাকায় ৪ কোটি টাকার কৃষি ও অকৃষি জমি, মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে দুটি দোকান, মিরপুরে ৭ তলা ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট, গ্রামের বাড়িতে একতলা ভবন এবং চাটখিলে পৈতৃক ভিটায় চারতলা বাড়ি রয়েছে বলে তথ্য রয়েছে।
এছাড়াও তার পরিবারের একটি আটতলা বাড়ি রয়েছে নোয়াখালী শহর মাইজদীর হরিনারায়নপুর এলাকায় যার ১৯টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮টি ভাড়া দেওয়া আছে।
অস্থাবর সম্পদ হিসেবে তার নগদ ও ব্যাংক মিলিয়ে ২ কোটি ৫২ লাখ ২ হাজার ৪৩০ টাকা, ডিপিএস ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, এফডিআর ১ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬৮ টাকা এবং তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবের স্থিতি ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৫ টাকা, ডিপিএস ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং অংশীদারি ফার্মে মূলধন ৬ কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
জাহাঙ্গীর আলম এ কে রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক ও হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছে মর্মে জানা যায়।