প্রচণ্ড বিধ্বংসী হ্যারিকেন ‘হেলেন’র তাণ্ডবে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩০ জনে। দক্ষিণ-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্রে এই ঝড়ের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রচারণায় এই দুর্যোগের খবর আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে।
ফেডারেল সরকার দ্রুত গতিতে পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে হোয়াইট হাউজ এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। খবর এএফপির
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিহতের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়া এখনও অনেকেরই কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে তিনি বুধবার নর্থ ক্যারোলিনা পরিদর্শন করবেন।
শক্তিশালী এই ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নর্থ ক্যারোলিনা। গত বৃহস্পতিবার রাতে ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড এলাকায় ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে ৪ ক্যাটাগরির এই ঘূর্ণিঝড়। এরপর সেটি জর্জিয়া, ক্যারোলিনা এবং টেনেসির দিকে অগ্রসর হয়। এর প্রভাবে সেসব অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিতে নদী-খাল প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, নর্থ ক্যারোলিনা, সাউথ ক্যারোলিনা, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া এবং টেনেসি-এই পাঁচটি রাজ্যের অনেক শহর প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিতে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে এবং লাখ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রশাসক ডিন ক্রিসওয়েল বলেন, অসংখ্য বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। পানির লাইন, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন রুটসহ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, পাঁচটি রাজ্যজুড়ে উদ্ধারকাজ চালানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। মুডি’স অ্যানালিটিক্সের অনুমান, এই ঘূর্ণিঝড়ে সম্পত্তির ক্ষতির পরিমাণ ১৫০ থেকে ২৬০ কোটি মার্কিন ডলার হতে পারে। অপরদিকে আকুওয়েদারের হিসাবমতে, হ্যারিকেন হেলেনের আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৯৫০ থেকে ১১শ কোটি ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন। ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, এই দুর্যোগকে ফেডারেল সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে না এবং তার সমর্থকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে না।
বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি (ট্রাম্প) মিথ্যা বলছেন। তিনি এমনটা কেন করছেন আমি জানি না। এটা একদমই সত্যি নয় এবং এটা দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ।
ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের মধ্যে ৫৭ জনই নর্থ ক্যারোলিনার। এছাড়া সাউথ ক্যারোলিনায় ২৯, জর্জিয়ায় ২৫, ফ্লোরিডায় ১৪, টেনেসিতে চারজন এবং ভার্জিনিয়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।