তিন কোটি টাকার চেক দিয়ে ডিসির পদায়নের প্রতিবেদনকে ‘গুজব’, ‘সম্পূর্ণ ভুয়া’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ দাবি করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। তার দাবি, ‘এটা কিছুই না।’
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পদায়নের মধ্যে দৈনিক কালবেলার একটি প্রতিবেদনে তুমুল আলোচনা তৈরি হওয়ার পর আজ সোমবার বিকালে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সম্পত্তি একটি পত্রিকায় কোনো সোর্স ছাড়া বড় ধরনের গুজব ছড়িয়েছে এবং ছবি টবি দিয়ে ‘ভাইরাল নিউজ’ করেছে। আপনাদেরকে অনুরোধ জানাব, একটা খবর দেওয়ার আগে একটা যাচাই করে দেবেন।’
সম্প্রতি কালবেলা পত্রিকায় ‘তিন কোটির ক্যাশ চেক দিয়ে ডিসির পদায়ন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, সম্প্রতি ডিসি নিয়োগকাণ্ডের অন্যতম ‘হোতা’ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিবের (এপিডি) কক্ষ থেকে ৩ কোটি টাকার একটি চেক উদ্ধার করা হয়েছে। পদায়ন হওয়া এক জেলা প্রশাসকের পক্ষে ওই যুগ্ম সচিবকে চেকটি দেন এক ব্যবসায়ী। তবে কাঙ্ক্ষিত জেলায় পদায়ন না হওয়ায় চেকের বিপরীতে টাকা জমা দেননি ডিসি।
এতে বলা হয়, সব কিছু ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চেকদাতা ওই ব্যবসায়ী। বিষয়টি নিয়ে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে বলে দাবি করা হয় ওই সংবাদে।
এরপর পর প্রতিবেদন এবং চেক এর সত্যতা যাচাইয়ে একটি কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই কমিটিতে প্রতিবেদককে হাজির হয়ে তথ্য দিতে অনুরোধ করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল করিম মাকসুদ জাহেদীকে এ কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিন দিনের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন মোখলেস।
তিনি বলেন, “এটা করে কি তিনি (প্রতিবেদক) নিজেকে খুব মূল্যবান জায়গায় নিয়েছেন? অথবা এই পত্রিকা? আজকে যখন বলব ‘এটা কিছুই ছিল না’, একটা ‘ভুয়া খবর’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, এই ধরনের একটা খবর আপনাদের (সাংবাদিক) সম্পর্কে প্রশ্নবোধক চিহ্ন এসে যায়।”
প্রতিবেদনের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “এখানে একজনের নাম ছিল মির্জা সবেদ আলী। একটা ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন পদ্মা ব্যাংকে। এটা হল আমাদের লক্ষ্মীপুর বাজার… ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন ২০২৩ সালে। যেদিন তদন্ত করা হয়, সেদিন সেই অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স ছিল শূন্য টাকা, কোনো টাকাই নাই।”
কমিটির তলবে প্রতিবেদক এসেছিলেন জানিয়ে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, “তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নাই। এই ধরনের নিউজ করে জাতিকে বিভ্রান্ত করে কী লাভ? কারণ, আপনাদের মাধ্যমে যে খবরটা যাবে সেটা প্রকৃত খবর, কারণ আপনারা ফোর্স।”
পদ্মা ব্যাংকের সেই হিসাব যথাযথ নিয়ম মেনে খোলা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে একটা ফরম পূরণ করতে হয়। এটা পূরণ না করেই অ্যাকাউন্ট করে দেযা হয়েছিল। সেই লোকের মোবাইল ফোন ওইদিন থেকে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। যে লোক তিন কেটি টাকার চেক দিতে পারে, তিনি কি হালকা লোক যে মোবাইল বন্ধ করে দিতে পারেন? এক কথায় বলতে পারি একটা ‘ভুয়া’ বিষয়কে জাতীয় পর্যায়ে এনে মানুষকে বিব্রত করা হয়েছে।”