ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, ছবি : সংগৃহীত
ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের সঙ্গে ‘ইতিবাচক ও গঠনমূলক’ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
গতকাল মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে এশিয়া সোসাইটি ও এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘ভারত, এশিয়া ও বিশ্ব’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ কথা জানান।
এস জয়শঙ্করের দাবি, ‘ভারত প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর রাজনৈতিক বিষয় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায় না। এ বিষয়ে আপনারা নিজেরা কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন না। বিষয়টি এমন নয় যে, ভারত প্রতিবেশীদের প্রতিটি রাজনৈতিক উদ্যোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। এভাবে কাজ হয় না। এভাবে শুধু আমরা না, কেউই কিছু অর্জন করতে পারে না।’
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাকে নিঃশর্তে সহায়তা করেছে ভারত। সম্প্রতি দুই দেশে সরকার পরিবর্তনের বিষয়টি নয়াদিল্লির জন্য বৈরী পরিবেশ সৃষ্টি করেছে- এমন মন্তব্যের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘দিন শেষে, প্রতিটি প্রতিবেশীর নিজস্বতা থাকে। আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে তাদের নিজস্বতা তারা অনুসরণ করুক। এটা বলা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমি মনে করি, বাস্তবে সবাই নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেন। দেশগুলো সে অনুযায়ী একে অপরের সঙ্গে মানিয়ে চলতে শিখে নেয়।’
বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন কিছুটা অন্যরকম উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘গত এক দশকে আমরা এমন কিছু প্রকল্পে কাজ করেছি যা উভয় দেশের জন্যই মঙ্গলজনক। সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বেড়েছে। এ অঞ্চলের লজিসটিক খাতের উন্নয়ন হয়েছে।’
একদিন আগেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জয়শঙ্কর।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দেশ তাদের নিজেদের ভাবনা অনুযায়ী চলে। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে আপনাকে যেকোনো বিষয় জেনে, বুঝে সে অনুযায়ী সাড়া দিতে হবে। আমি আত্মবিশ্বাসী যে সব কিছুর শেষে, আমরা অনুধাবন করব যে প্রতিবেশী হিসেবে আমরা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। এক দেশ অপর দেশের উপকারে আসতে পারে। শান্তিপূর্ণ সহবস্থান সবার স্বার্থরক্ষা করবে। এই বাস্তবতার প্রকাশ ঘটবেই। ইতিহাসও তাই বলে।’
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কয়েক বছর পর পর এই অঞ্চলে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা দেখে মানুষ বলতে থাকে, এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই। কিন্তু পরে দেখা যায়, পরিস্থিতির উন্নয়নে কিছু উদ্যোগ সামনে আসে। এসব কারণেই, আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে চাই, উভয় দেশের ক্ষেত্রেই, আমাদের ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।’