সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি যদি এ বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যান, তাহলে ২০২৮ সালের নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা নেই।
৭৮ বছর বয়সি ট্রাম্প টানা তিনটি জাতীয় নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন এবং গত আট বছরে দলটিকে ব্যাপকভাবে পুনর্গঠন করেছেন।
সিনক্লেয়ার মিডিয়া গ্রুপকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করেছেন, এবার হেরে গেলে ২০২৮ সালের নির্বাচনে তার অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি যদি ডেমোক্র্যাটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসের কাছে পরাজিত হন, তাহলে ভবিষ্যতে ফের নির্বাচনি লড়াইয়ে নামার সম্ভাবনা আছে কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, 'না, আমার তা মনে হয় না। সেরকম কোনো সম্ভাবনাই দেখছি না।'
তবে তিনি এও বলেন, ‘আশা করি আমরা দারুণ সাফল্য পাব।’
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, কোনো প্রেসিডেন্ট দুই মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। তাই ট্রাম্প যদি ২০২৮ সালে নির্বাচিত হন, তিনি এমনিতেও আর প্রার্থী হতে পারবেন না।
আগে রিয়েল এস্টেট মোগল ট্রাম্পের নির্বাচনে পরাজয়ের সম্ভাবনা মেনে নেওয়ার নজির অত্যন্ত বিরল ছিল। অতীতে তিনি প্রায়ই নির্বাচনে জয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমর্থকদের উজ্জীবিত করেছেন। তবে সম্প্রতি চার দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো পরাজয়ের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বললেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি-আমেরিকান কাউন্সিল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি পরাজয়ের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন। সেখানে ইঙ্গিত দেন, আংশিকভাবে ইহুদি ভোটারদের ভুলের জন্য তিনি হারতে পারেন।
ইহুদি ভোটারদের দিকে ইঙ্গিত করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি যদি এই নির্বাচনে না জিতি, তাহলে কী ঘটবে সেটা কি তারা জানে?’
হ্যারিসের প্রচারাভিযান ও নিরপেক্ষ সংস্থা আমেরিকান জুইশ কমিটি ও অ্যান্টি-ডিফেমেশন লিগের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের এই মন্তব্যের সমালোচনা করা হয়েছে।
পরাজয়ের সম্ভাবনা মেনে নিয়ে ট্রাম্প যে মন্তব্য করেছেন, তাতে সম্ভবত কমালা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিফলই ঘটেছে।
কমালা হ্যারিস ও তার শিবির আগস্টে ১৯০ মিলিয়ন ডলার অনুদান তুলতে পেরেছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প শিবির তুলতে পেরেছে ১৩০ মিলিয়ন ডলার।
জাতীয় জরিপ গড় অনুযায়ী, হ্যারিস এখন ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। সিবিএসের সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, কমালা হ্যারিসের জনসমর্থন ৫২ শতাংশ, আর ট্রাম্পের জনসমর্থন ৪৮ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের ভোটযুদ্ধের ময়দানের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতে হ্যারিস সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। ওইসব রাজ্যে তার জনসমর্থন ৫১ শতাংশ, আর ট্রাম্পের ৪৯ শতাংশ।
অন্যদিকে, এনবিসির আরেকটি জরিপে দেখা গেছে, কমালা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পের চেয়ে ৫ শতাংশীয় পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন।
ওই জরিপে আরও উঠে এসেছে, ৪৮ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার হ্যারিসকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন, যা জুলাইয়ে ছিল ৩২ শতাংশ।
তবে অন্যান্য সমীক্ষার মতোই এনবিসি জরিপেও দেখা গেছে যে অর্থনীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় ও অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্প এখনও স্পষ্টভাবে এগিয়ে রয়েছেন।